জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও সাকিব আল হাসান যেন বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন—বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারদের কাতারে তাকে উপেক্ষা করা যায় না। পারফরম্যান্স দিয়ে নয়, বরং পরিসংখ্যান, রেকর্ড আর ম্যাচ নির্ধারণী মুহূর্তে অবদান রেখেই নিজের জায়গাটা বারবার শক্ত করে নিচ্ছেন তিনি।
সাম্প্রতিক ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (CPL) এক ম্যাচে টি২০ ক্রিকেটে প্রথম বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে ৫০০ উইকেটের ঐতিহাসিক মাইলফলকে পৌঁছেছেন সাকিব। ক্রিকেট ইতিহাসে এই কীর্তি গড়েছেন অনন্য স্টাইলে—বল হাতে ৩ উইকেট, ব্যাট হাতে কার্যকর ২৫ রান, আর তার দলও পেয়েছে ৭ উইকেটের দাপুটে জয়। ফলাফল—ম্যাচসেরা সাকিব আল হাসান।
অবহেলার জবাব মাঠেই
এই পারফরম্যান্সটা আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে যখন দেখা যায়, টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই অধিনায়ক ইমাদ ওয়াসিম সাকিবকে সেভাবে সুযোগই দিচ্ছিলেন না। অভিজ্ঞতা, র্যাংকিং আর ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও, এক ওভারের বেশি বল করানো হচ্ছিল না তাকে। ম্যাচের শুরুতে বোলিং শুরু করতেন ইমাদ নিজেই, সাকিবকে নামানো হতো শেষে।
তবে সেই উপেক্ষার জবাব তিনি দিলেন মাঠে পারফর্ম করে। এন্টিগুয়া অ্যান্ড বার্বুডা ফ্যালকনসের জার্সিতে বোলিং করতে আসেন ১৫তম ওভারে। ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকান মোহাম্মদ রিজওয়ান, তবে শেষ বলেই সাকিবের ঘূর্ণির ফাঁদে কেটে যান তিনি। আর এই উইকেটটিই সাকিবের স্বীকৃত টি২০ ক্রিকেটে ৫০০তম শিকার। ঐতিহাসিক মুহূর্তের পর জোড়া আঘাত
১৭তম ওভারে আবার বোলিংয়ে এসে জোড়া উইকেট শিকার করেন সাকিব। তুলে নেন বিধ্বংসী কাইল মেয়ারসকেও। দুই ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে ১৮ বলে করেন ২৫ রান। দল যখন ১৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে, তখন তার ইনিংস ছিল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত কার্যকর।
এই অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য সাকিব পেলেন ম্যাচসেরা পুরস্কার—টি২০ ক্রিকেটে এটি তার ক্যারিয়ারের ৪৪তম ম্যাচসেরা অর্জন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এই তালিকায় তিনি এখন আছেন পাঁচ নম্বরে। পেছনে ফেলেছেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মার মতো টি২০ দুনিয়ার বড় নামদের—যারা আলোচনায় থাকলেও, পরিসংখ্যানে সাকিবের ধারেকাছেও নেই।