ম্যাচ শুরুর আগেই মাঠে ছিল বন্ধুত্বের রঙ। নেইমার আর ফিলিপে কৌতিনহো—দুজনের আলিঙ্গনে যেন ভেসে উঠেছিল ব্রাজিলের সোনালি স্মৃতি। দীর্ঘদিন পর একে অপরের সঙ্গে দেখা হওয়ায় ছিল হাসি-খুশির ঝলক, মনে হচ্ছিল পুরোনো দিনের মতো আজও তৈরি হবে দারুণ সব মুহূর্ত।
কিন্তু খেলা গড়াতেই বদলে গেল দৃশ্যপট। যে নেইমার ম্যাচ শুরুর আগে বন্ধুর সঙ্গে খুনসুটি করেছিলেন, সেই নেইমারই ম্যাচ শেষে ভেঙে পড়লেন কান্নায়। কারণও যে ছোট নয়! নেইমারের সান্তোসকে একে একে ৬ গোল উপহার দিল প্রতিপক্ষ ভাস্কো দা গামা। আর এই ভরাডুবির পেছনে বড় ভূমিকা রাখলেন কৌতিনহো নিজেই—দুটি গোলের সঙ্গে তৈরি করলেন আরও আক্রমণের সুযোগ।
রেলিগেশন লড়াইয়ে লজ্জার হার
লিগ টেবিলের তলানিতে থাকা দুই দল—সান্তোস ও ভাস্কো দা গামা মুখোমুখি হয়েছিল রেলিগেশন এড়ানোর লড়াইয়ে। কিন্তু ফলটা ইতিহাস হয়ে গেল সান্তোসের জন্য—তাও নেতিবাচক ইতিহাস।
১৮ মিনিটে পিতনের গোলে এগিয়ে যায় ভাস্কো। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-০ ব্যবধানেই। তবে বিরতির পর ঝড় তুলল ভাস্কো। ৪৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডেভিড। এরপর ৫৪ মিনিটে কৌতিনহোর প্রথম গোল, ৬০ মিনিটে রায়ানের পেনাল্টি থেকে গোল, ৬২ মিনিটে কৌতিনহোর দ্বিতীয় গোল এবং ৬৮ মিনিটে টিকে টিকের গোল—সব মিলিয়ে ৬-০ তে গুঁড়িয়ে যায় নেইমারের সান্তোস।
নেইমারের সবচেয়ে বড় হার
চোটের সঙ্গে লড়াই করেই মাঠে নামছিলেন নেইমার। আগেও হেরেছেন তিনি, তবে ক্যারিয়ারে এত বড় ব্যবধানের হারের অভিজ্ঞতা ছিল না তার। তাই ম্যাচ শেষে চোখের জলে ভেসেই মাঠ ছাড়লেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার।
নেইমার বলেন—
“আমি খুবই লজ্জিত। এরকম পারফরম্যান্সে পুরো ক্লাব হতাশ। সমর্থকদের অধিকার আছে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলার।”
কোচ বরখাস্ত, সমর্থকদের প্রতিবাদ
ভাস্কোর কাছে লজ্জাজনক হারের পরপরই বরখাস্ত করা হয়েছে সান্তোস কোচ ক্লেবার হাভিয়েরকে। সমর্থকরা ক্ষোভ প্রকাশে পিছপা হননি, স্ট্যান্ডে বসে জার্সির পেছন দিক ঘুরিয়ে দলের বাজে হালের প্রতিবাদ জানান তারা।
একদিকে বন্ধুর হাসিতে উজ্জ্বল কৌতিনহো, অন্যদিকে অশ্রুসিক্ত নেইমার—মাঠে যেন ফুটে উঠল একই গল্পের দুই পিঠ।