খেলা

আমেরিকান লীগে খেলবেন সাকিব

স্টাফ রিপোর্টার

স্টাফ রিপোর্টার

রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫
আমেরিকান লীগে খেলবেন সাকিব

কথায় আছে হাতি বাঁচলেও লাখ টাকা, মরলেও লাখ টাকা। একদা নিন্দুকেরা বলতো, জাতীয় দলের ট্যাগ ব্যবহার করে সাকিব বিশ্বের সব লীগে খেলে বেড়ায় টাকার জন্য। এখন নেই জাতীয় দলের সেই তকমা। লাল সবুজের জার্সি থেকে অনেকটা দুরে তিনি কিন্তু ক্রিকেট থেকে দুরে নয়।  ৩৮ বছর বয়সি এই অলরাউন্ডারের ক্যারিয়ারের  যেনো গোধূলী লগ্নে আছেন তিনি তাও কদর যেনো কমেনি। এখন সাকিব আগের মতোই যেনো চির সবুজ, চির উজ্জল। তাইতো বিশ্বের বড়ো বড়ো লীগ গুলোতে এখনো ঘটা করেই বাজে সাকিব নামের প্রতিধ্বনি। এমনকি লীগ বা দল ‍গুলোর প্রমোশনাল যতো ব্যানার পোস্টার থাকে, সেখানে সাকিবর উপস্থিতি যেনো ‍সুনিশ্চিত সর্বদাই।  নামটাই যেনো ক্রিকেটের অন্যতম বড়ো এক ব্র্যান্ড। 


বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে ফিরতে পারছেন না সাকিব আল হাসান। ফলে তিনি দেশের বাইরে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার মাধ্যমে নিজের সময় কাটাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর, নিউইয়র্কের স্থানীয় কিছু শৌখিন ক্রিকেট ম্যাচেও তাঁকে অংশ নিতে দেখা গেছে, যেখানে তিনি অপেশাদার ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলেছেন। যদিও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি এখনো একজন পরিপূর্ণ পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবেই পরিচিত।
এই প্রথমবারের মতো তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাইনর লিগ ক্রিকেটে অংশ নিতে যাচ্ছেন। এটি মূলত টি-টোয়েন্টি সংস্করণের একটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট, যা আইসিসির সরাসরি স্বীকৃতি পায়নি। তবে এই প্রতিযোগিতাকে মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি)-এর একটি উন্নয়নমূলক স্তর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০২৩ সাল থেকে এই লিগকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) তাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন কাঠামোর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে।
এবার এই মাইনর লিগে খেলবেন সাকিব আল হাসান, যাঁকে দলে ভিড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশি মালিকানাধীন দল ‘আটলান্টা ফায়ার্স’। আন্তর্জাতিক তারকা হিসেবে সাকিব 'ওয়াইল্ড কার্ড' সুবিধার আওতায় বিদেশি কোটায় অংশগ্রহণ করবেন। এই একই কোটার আওতায় এর আগে বাংলাদেশি অলরাউন্ডার নাসির হোসেনও এই লিগে খেলেছেন।
বর্তমানে সাকিব তাঁর পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাঁর স্ত্রী একজন মার্কিন নাগরিক হলেও সাকিব এখনো মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহণ করেননি। তবুও বলা চলে এটাকে তার সেকেন্ড হোম। যেহেতু সপরিবারে সবাই বসবাস করেন অ্যামেরিকায়। বর্তমানে তিনি খেলছেন ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগ সিপিএলে। যেখানে প্রথম ম্যাচে ব্যাটে বলে জ্বলে উঠতে পারেননি এক সময়ের বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার । তবে টূর্নামেন্ট সবে শুরু। সুযোগ আছে পূর্বের সবকিছু ভুলে নিজেকে আরো একবার বিশ্ব মঞ্চে আলোচনায় ফিরিয়ে আনবার। বোলিংয়ে নিষেধাজ্ঞার পর থেকে সাকিব যেনো অনেকটা বিবর্ণ। ক্রিকেটে ঠিকই ফিরে আসেন, মাঠেও নামেন যেনো জাতীয় দলের চেয়েও অনেক বেশি ব্যস্ত সিডিউল তার। কিন্তু আগের মতো ব্যাটে বলে সেই জৌলশ সচারচর দেখা মেলে না। আগের মতো ম্যাচের সমস্ত আলো পার্ফমেন্স দিয়ে তিনি কাড়তে পারছেন না। তবে সতীর্থ কিংবা প্রতিপক্ষ, সম্মান করতে ভুল করে না সাকিববে। যে অর্জন তার নিজের, বহু পথ ধরে, বহু ঘাম ঝরে।
বয়স আর পরিস্থিতি বিবেচনায় বলাই যায় জাতীয় দলের দরজা বন্ধ সাকিবের জন্য। তেতো সত্যি, আর কখনোই হয়তো লাল সবুজের জার্সি গায়ে মাঠে দেখা যাবে না এই অলরাউন্ডারকে। যাকে সবাই এক সময় বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ বলে ডাকতো। এখন তিনি অনেকটা নির্বাসনে, সবুজের ছায়া থেকে অনেকটা দুরে।

তবে যেখানেই খেলুক, সাকিব ক্রিকেট চালিয়ে যাক, ব্যাটে বলে গোটা দূনিয়াকে মুগ্ধ করে যাক এমনটাই চাইবে ভক্ত সমর্থকেরা। 
ধারাভাষ্যে অন্তত শুনতে পাওয়া যাবে, সাকিব আল হাসান ফ্রম বাংলাদেশ।