ভারতের গুজরাট দলের উইকেটকিপার-ব্যাটার উর্বিল প্যাটেল মুশতাক আলী ট্রফিতে অসাধারণ এক কীর্তি গড়েছেন। আইপিএলে দল না পাওয়ার হতাশা কাটিয়ে উঠতে তিনি মাত্র ২৮ বলে সেঞ্চুরি করেছেন, যা ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। বুধবার ত্রিপুরার বিপক্ষে তার এই বিধ্বংসী ইনিংস গুজরাটকে অনায়াসে জয় এনে দেয়।
ত্রিপুরার বিপক্ষে খেলতে নেমে উর্বিল যেন আগুন ঝরালেন ব্যাট হাতে। মাত্র ২৮ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করে তিনি ভারতীয় ক্রিকেটে ইতিহাস গড়লেন। তার বিধ্বংসী ইনিংসে ৭টি চার এবং ১২টি বিশাল ছক্কার মার ছিল। ইনিংস শেষে তিনি অপরাজিত থাকেন মাত্র ৩৫ বলে ১১৩ রান করে। তার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে গুজরাট দল সহজেই ম্যাচটি জিতে নেয়।
উর্বিলের এই ইনিংস স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। মাত্র এক বলের ব্যবধানে তিনি বিশ্ব রেকর্ড ছুঁতে পারেননি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি এস্তোনিয়ার ব্যাটার সাহিল চৌহানের দখলে। গত জুন মাসে সাইপ্রাসের বিপক্ষে তিনি মাত্র ২৭ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। তবে উর্বিল ভেঙেছেন ভারতীয় উইকেটকিপার-ব্যাটার ঋষভ পান্তের রেকর্ড। এর আগে পান্ত ৩২ বলে সেঞ্চুরি করে ভারতের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন।
গত বছরের আইপিএল নিলামে দল না পাওয়ার কারণে উর্বিল হতাশ ছিলেন। যদিও তিনি এর আগে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ভারতের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তি করেছিলেন। তবুও আইপিএলে দল না পাওয়া তাকে ভীষণভাবে আঘাত করেছিল। মুশতাক আলী ট্রফিতে এই ইনিংস যেন তার সেই হতাশার জবাব। তিনি তার পারফরম্যান্স দিয়ে প্রমাণ করলেন, আইপিএলের দলগুলো তার যোগ্যতা ঠিকভাবে মূল্যায়ন করেনি।
উর্বিল প্যাটেল একজন প্রতিভাবান উইকেটকিপার-ব্যাটার। তবে তার সাফল্যের পথ এতদিন খুব সহজ ছিল না। নিজেকে প্রমাণের জন্য তিনি মুশতাক আলী ট্রফিকে বেছে নেন এবং সেখানে নজির গড়েন। এই ইনিংস তাকে আইপিএল দলগুলোর নজরে এনে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তার এই পারফরম্যান্স তাকে জাতীয় দল কিংবা ভবিষ্যতে আইপিএলের মঞ্চে সুযোগ এনে দেবে।
উর্বিলের এই ইনিংস ইতোমধ্যে ক্রিকেটবিশ্বে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটে তরুণদের মাঝে যে প্রতিযোগিতা এবং প্রতিভার ছড়াছড়ি রয়েছে, তা আবারও প্রমাণ হলো। তার ইনিংস কেবল আইপিএলে দল না পাওয়া একজন খেলোয়াড়ের প্রতিভার প্রদর্শনী নয়, বরং এটি দেশের ক্রিকেটের শক্তিশালী ভীতের একটি উদাহরণ।
উর্বিল প্যাটেলের এই অসাধারণ ইনিংস কেবল একটি ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং তা ভবিষ্যতে তাকে আরও বড় মঞ্চে জায়গা করে দেওয়ার সোপান হতে পারে। তার সাফল্য তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, যারা সুযোগ না পেয়ে হতাশ হন।