ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেলের চেজ স্টেডিয়ামে আজ ভোরে যেন রূপকথার মঞ্চ বসেছিল। ইন্টার মায়ামি মুখোমুখি হয়েছিল এলএ গ্যালাক্সির, আর গ্যালারিতে ছিল উপচে পড়া দর্শক। কারণ ছিল একটাই—দীর্ঘ ১৫ দিন পর ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরছেন ফুটবল মহাতারকা লিওনেল মেসি।
ম্যাচের শুরুতে মায়ামির ঝলক
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে ইন্টার মায়ামি। আক্রমণাত্মক সেই খেলার ফল মেলে ৪৩ মিনিটে, যখন জর্ডি আলবার দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক দল।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় এলএ গ্যালাক্সি। ৫৯ মিনিটে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরায় তারা। আর ঠিক তখনই মাঠে নামেন লিওনেল মেসি। দর্শকদের মাঝে তখন উত্তেজনা চরমে। কিন্তু মেসির মাঠে নামার পরপরই গোল হজম করে মায়ামি—যা কিছুটা হতাশার হলেও, সেটা যেন পুরো দলকে তাতিয়ে তোলে নতুনভাবে।
৮৪ মিনিটে মেসির জাদু
৮৪ মিনিট, ম্যাচ তখন ১-১। সময় গড়াচ্ছে, অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন হয়তো দুই দলের মধ্যেই পয়েন্ট ভাগাভাগি হবে। কিন্তু মেসি থাকলে ভবিষ্যৎ অনুমান করা ভুল।
রদ্রিগো ডি পলের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে একক নৈপুণ্যে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাঁ পায়ের বিখ্যাত কার্লিং শটে বল পাঠিয়ে দেন গোলপোস্টের টপ কর্নারে। গোলকিপারের কিছুই করার ছিল না—শুধু তাকিয়ে দেখার মতো গোল!
স্টেডিয়ামে তখন বিস্ফোরণ, উল্লাসে ফেটে পড়েন মায়ামির সমর্থকেরা। ইন্টার মায়ামি ২, এলএ গ্যালাক্সি ১।
থামেননি এখানেই
গোল করে দাঁড়িয়ে পড়েন মেসি, কিছুটা হাসিমুখে প্রতিপক্ষের দিকে তাকিয়ে যেন বললেন—“কেমন দিলাম?” পাশে থাকা লুইস সুয়ারেজও যেন কিছুটা হতবাক, যদিও এ দৃশ্য তাঁর জন্য নতুন নয়।
ম্যাচের ৮৯ মিনিটে মেসি ফের জাদু দেখান—বক্সের ধারে এক দৃষ্টিনন্দন ব্যাকহিল পাসে বল বাড়িয়ে দেন সুয়ারেজকে। সুয়ারেজও পিছিয়ে থাকেননি—দারুণ এক ফিনিশিংয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালে। তাতেই জয় নিশ্চিত করে ইন্টার মায়ামি।
শেষপর্যন্ত স্কোরলাইন: ইন্টার মায়ামি ৩-১ এলএ গ্যালাক্সি
মাত্র ১৫ দিনের বিরতি কাটিয়ে ফিরেই এক গোল ও এক অ্যাসিস্ট—মেসির এমন পারফর্ম্যান্স যেন আবারও প্রমাণ করল, কেন তিনি ফুটবল ইতিহাসের সেরাদের সেরা। মায়ামি পেয়েছে কেবল জয় নয়, ফিরে পেয়েছে আত্মবিশ্বাস এবং তাদের জাদুকরকে।