ম্যাচের মাত্র ৭ মিনিট, আর বলটা যখন এলো লিওনেল মেসির পায়ে, তখন পুরো স্টেডিয়াম যেন এক মুহূর্ত নিঃশ্বাস বন্ধ করে অপেক্ষা করছিল—কী জাদু দেখান ফুটবলের এই জাদুকর। এক ঝলকেই পুরনো দিনের সেই চেনা রূপ দেখিয়ে দিলেন মেসি। নেকাজার একজন খেলোয়াড়কে চোখের পলকে ফাঁকি দিয়ে ছুটলেন প্রতিপক্ষের বক্সের দিকে। তার চলাফেরা, বলের নিয়ন্ত্রণ, গতি, সবই ছিল নিখুঁত। তাকে থামাতে ছুটে এলেন ১১ ও ২৮ নম্বর জার্সি পরা দুই ডিফেন্ডার। পরে যোগ দিলেন ৪ নম্বর ডিফেন্ডারও। কিন্তু থামাতে গিয়ে যেন একটু বেশিই করে ফেললেন তারা—মেসিকে ফেলে দিলেন মাঠে। আর তখনই স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো স্টেডিয়াম।
মেসি পড়ে আছেন মাঠে, নড়ছেন, কিন্তু উঠে দাঁড়াচ্ছেন না। চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে নিঃশব্দ আতঙ্ক। গ্যালারিতে যেন মুহূর্তেই জমে ওঠে দুশ্চিন্তার মেঘ। যারা তাকে দেখতে এসেছেন, তারা তখন একটাই প্রশ্নে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত—“মেসি কি আবার উঠবেন?” চিকিৎসা নেওয়ার পর মেসি হাঁটতে হাঁটতে মাঠ ছাড়েন। চোখেমুখে অস্বস্তি, গ্যালারিতে চোখে জল। প্রাথমিকভাবে বোঝা যায়, উরুর মাংসপেশিতে কিছুটা চোট পেয়েছেন তিনি।
ম্যাচ শেষে মেসির সতীর্থ রদ্রিগো ডি পল বলেন, “আমি আপনাকে বোঝাতে পারব না কেমন লেগেছিল যখন তাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখলাম। আমি কোচের মুখের দিকে তাকালাম, তার চোখেও দেখি একই ভয়। হাফটাইমে ড্রেসিংরুমে দৌড়ে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি, ‘লিও, কেমন আছো?’ সে বলল, ‘চিন্তা করো না রদ্রি, উরুতে একটু অস্বস্তি, বড় কিছু না।’”
ডি পলের সেই কথাই এখন ভরসার জায়গা। মেসির উপস্থিতি যে দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আজ আর অজানা নয়। যার আগমনে এক সময়ের ইতিহাস-শূন্য ইন্টার মায়ামি এখন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সেরা দল, ঝুলিতে রয়েছে দুটি ট্রফি।
এখন অপেক্ষা—কবে মাঠে ফিরবেন লিওনেল মেসি।