দীর্ঘ ৭ বছরের প্রেম! অতঃপর বিয়ে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সুদর্শন পেসার তাসকিন ও নাঈমার বিয়ের গল্পটা ছিলো এমনই!
তারকাখ্যাতি তখনও তাসকিনের জীবনে ধরা দেয়নি যখন থেকে নাঈমার সাথে তার সম্পর্কের শুরু! ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় নাঈমার প্রেমে পড়েছিলেন তাসকিন।
তবে শুরুতে বাংলাদেশ দলের সুদর্শন এই পেসার নাকি পাত্তাই পাননি নাঈমার কাছে! রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে নাঈমা ছিলেন শান্ত, পড়াশুনায় ভালো, মেনে চলতেন ইসলামিক অনুশাসনও।
অন্যদিকে ক্লাসের সবচেয়ে দুষ্টু ছিল তাসকিন। এজন্যই নাঈমার সবচেয়ে অপছন্দের ছেলেও ছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও নাঈমার পিছু ছাড়েননি তাসকিন।
নানা অজুহাতে কিংবা বাহানায় নাঈমার কাছে প্রশ্ন, সাজেশন আনতে যেতেন তিনি। নাঈমাকে রাজি করাতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তার।
দুজনের মিষ্টি প্রেমের শুরুটা হয় তাসকিনের ছোট বোন প্রিয়ন্তির জন্মদিনে। এসএসসি পরীক্ষার আগে দুজনের মধ্যে শুরু হয় চিঠির আদান প্রদান।
আস্তে আস্তে পরিপক্কতা পায় তাদের প্রেম। গ্রামে কানাকানি হলে পিছু নেয় নিন্দুকেরা। পরবর্তীতে নাঈমার পরিবারও জানতে পারে বিষয়টি।
ক্রিকেটার হওয়ার পর অনেক মেয়েই তাসকিনের প্রেমে পড়েছে। কিন্তু নাঈমাকে ছেড়ে যাননি তাসকিন, তাকেই ভালোবেসেছেন।
২০১৭ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অনেক খারাপ খেলেছিলেন তাসকিন। অনেক হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা অবস্থায়ই বাবাকে জানালেন, দেশে এসে নাঈমাকে বিয়ে করতে চাই। ক্রিকেটে আরও মনোযোগ বাড়াতে চাই আমি , এজন্য চাই ও আমার সাথে থাকুক।
সফর শেষে বাসায় এসে লম্বা এক ঘুম দিলেন তাসকিন। ঘুমন্ত তাসকিনকে ডেকে তার বাবা আবদুল রশিদ বলেন, 'ওঠ বাবা, কাজটা শেষ করে আসি’।
তারপর বাকিটা ইতিহাস! গায়ে হলুদ, আংটি বদল, বিয়ে -অনেকটা আকস্মিকভাবেই ঘটে গেছে সবকিছু।
তাসকিন দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকাকালেই নাঈমার পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হল, দেশে আসার আগেই সারা হল সব আয়োজন।
সকালে দক্ষিক আফ্রিকা থেকে দেশে এসে সন্ধ্যায়ই বসেছেন বিয়ের পিড়িতে। তাসকিনের জীবনের এ গুরুত্বপূর্ণ অংশ আলোচনায় পরিণত হয়েছিল আরেকটি কারণে।
তার বিয়ের উকিল বাবা ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা! দেশের অনেক মেয়েই তাসকিনের জন্য রীতিমতো পাগল ছিলো।
অন্য কোনো মেয়ের প্রতি আসক্তি যাতে না জন্মায় পাশাপাশি নিজের ক্যারিয়ারের উন্নতি সবকিছু মিলিয়েই তাসকিন নাঈমাকে বিয়ে করেন।
২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তাসকিন-নাঈমার কোলজুড়ে আসে তাদের প্রথম সন্তান তাসফিন আহমেদ রিহান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাসকিন নিজেই জানিয়েছিলেন এ সুখবর। ফেসবুক প্রোফাইল ও পেজে দেওয়া বার্তায় তাসকিন লিখেন, 'আলহামদুলিল্লাহ, আমার ছেলে।'
পোস্ট দেয়ার কিছুক্ষণ পরে তার পোস্টের মন্তব্য করার জায়গায় বেশ কিছু নেতিবাচক মন্তব্য দেখা যায়।
যার মূল বিষয় ছিল তাসকিন আহমেদ ও তার স্ত্রী সৈয়দা রাবেয়া নাঈমার বিয়ের সময়কাল ও সন্তান জন্ম নেয়ার সময়কাল নিয়ে প্রশ্ন।
নেটিজেনরা মন্তব্য করেন বিয়ের ছয় মাসেই বাবা হয়েছেন তাসকিন। শেষ পর্যন্ত তাসকিন নিজেই বাধ্য হয়ে একটি ব্যাখ্যামূলক মন্তব্য পোস্ট করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি পরিষ্কার করেন।
গেলো ঈদুল ফিতরের আগেই দ্বিতীয়বারের মতো বাবা হয়েছেন তিনি। তাসকিন আহমেদ ও সৈয়দা রাবেয়া নাঈমা দম্পতির কোলজুড়ে এসেছে এক কন্যা সন্তান।
বর্তমানে স্ত্রী সন্তান আর বাবা মা নিয়ে সুখেই দিন কাটছে তাসকিন আহমেদ এর।