খেলা

ক্রিকেটের ইতিহাসে কোন পেসার সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বল করেছেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
ক্রিকেটের ইতিহাসে কোন পেসার সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বল করেছেন?



একটা সময় ছিল ক্রিকেট খেলা মানেই পেস বোলারের বাইশ গজের পিচে গতির ঝড় তুলবেন। তবে সময়ের ব্যবধানে সেই ধারা ইতিমধ্যেই পাল্টেছে। 

তারা এখন গতি ছাড়া ও বলের লাইন লেন্থ কিংবা সুইং এর প্রতি অনেক বেশি মনযোগ দিচ্ছেন। তবে ক্রিকেটের আড্ডায় দ্রুতগতির বল নিয়ে আলোচনা এখনো চলে। 

কে ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলার এই প্রশ্নের উত্তরে একবাক্যে বেশিরভাগ ক্রিকেট ভক্তই হয়তো বলে উঠবে রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস খ্যাত শোয়েব আখতারের নাম। 

তবে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট সমর্থকদের অনেকেই এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন ব্রেট লির নাম। তাই প্রশ্ন থেকে যায় এই দুইজনের মধ্যে কে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বল করেছেন। 

পরিসংখ্যান মতে ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুতগতির বলটি পাক পেসার শোয়েব আখতারের করা। এই ফাস্ট বোলারের সর্বোচ্চ গতির ডেলিভারিটি ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার। 

শত মাইল গতির এই বলটি তিনি করেছেন দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে তাদেরই হোম গ্রাউন্ডে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে কোয়ালিফাইয়ার রাউন্ডের এক ম্যাচে। 

বলে প্রচন্ড গতির কারনে ক্রিকেট পাড়ায় শোয়েব আখতার রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস নামে খ্যাত। ইতিহাসে তিনিই একমাত্র বোলার যে ১০০শ মাইলের উপরে বল করেছেন দুইবার।

তার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গতির বল ছিল একই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে। সেই ম্যাচে ও তার একটি বলের গতি ছিল ঘন্টায় প্রায় ১৬১.৩ কিলোমিটার। 

দ্রুতগতিতে বল ছোড়ার এই প্রতিযোগিতায় শোয়েব আখতারের একমাত্র প্রতিদন্ধী বলা হয় দুই অজি ফাস্ট বোলার শন টেইট এবং ব্রেট-লিকে। 

এই দুইজন বোলারেরই শত মাইল গতিতে বল করার রেকর্ড রয়েছে। তাদের দুজনের সবচেয়ে দ্রুতগতির ডেলিভারিটি ছিল ঘণ্টায় ১৬১.১ কিলোমিটার গতির। 

এর মধ্যে ব্রেট লি ২০০৫ সালে নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার দ্রুতগতির বলটি করেছিলেন। শন টেইটের দ্রুততম ডেলিভারিটি ছিল চির প্রতিদন্ধী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।

ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে অস্ট্রেলিয়ানরা প্রাকৃতিকভাবেই জোরে বল করার একটা দক্ষতা অর্জন করে। সেই ধারাবাহিকতার শুরুটা করেছিলেন গতি সম্রাট খ্যাত জেফ থমসন। 

আধুনিক ক্রিকেটের একদম শুরুর দিকে ১৯৭৫ সালে তিনি ওয়েস্ট উইন্ডিজের বিপক্ষে পার্থ স্টেডিয়ামে প্রায় শত মাইল ছুই ছুই একটা বল করেছিলেন। 

তখন আধুনিক স্পিডোমিটার না থাকলে ও সেই সময়ের প্রযুক্তি দিয়ে তার বলের গতি মাপা হয়েছিল ঘন্টায় প্রায় ১৬০.৬ কিলোমিটার যা যেকোন সাধারন গাড়ির চেয়ে অনেক বেশি দ্রুত। 

দ্রুতগতির বোলারদের এই তালিকায় আছেন আরেক অজি তারকা মিচেল স্টার্ক। ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক টেস্টে তিনি বল করেছিলেন ১৬০.৪ কিলোমিটার গতিতে। 
তবে এরপরে সবাইকে অনেকটা অবাক করে দিয়ে দ্রুতগতির বোলারদের এই তালিকায় উঠে এসেছে বর্তমান যুগের তারকা পাকিস্থানি হারিস রউফ এবং ভারতীয় উমরান মালিকদের নাম। 

হারিস রউফ গেল বিশ্বকাপেই পাকিস্থানের জার্সিতে ঘন্টায় প্রায় ১৫৯ কিলোমিটার গতিতে বল ছুড়েছেন। আর আইপিএলে উমরানের গতি উঠেছে ১৫৭ কিলোমিটার পর্যন্ত। 

এই দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে ক্রিকেট দুনিয়াই। অনেকেই ধারনা করছেন এই দুই পেসার হয়তো অতিতের সব রেকর্ড ভাঙবেন। 

প্রেস্টিজিয়াস এই তালিকায় এরপরেই জায়গা করে নিয়েছেন ওয়েস্ট উইন্ডিজের সোনালী প্রজন্মের তারকা পেসার এন্ডি রবার্টস এবং ফিদেল এডওয়ার্ডস। 

তাদের দুইজনেরই সর্বোচ্চ বলের গতি ছিল ঘন্টায় প্রায় ৯৭ মাইলের ও বেশি। এছাড়া এই তালিকায় একেবারে শেষ দিকে এসেছে সাবেক অজি তারকা মিচেল জনসনের নাম। 

ঐতিহাসিক মেলবোর্নের এমসিজে গ্রাউন্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি প্রায় ১৫৬.৬ কিলো গতিতে বল করেছেন। 

উমরান ও হারিসের পার্থক্য বোঝাতে যখন কোহলি ‘উদাহরণ’ | 

গতির ঝড়ে আলোড়ন তোলা ১০ বোলারের গল্প 

এক নজরে দেখে নিন বিশ্বক্রিকেটে সর্বোচ্চ দ্রুতগতির তিন বোলারের বলের গতি।