একটি দুর্ঘটনা বদলে দিল সম্ভাবনাময় এক জীবনের গল্প। লিভারপুল ও পর্তুগালের জাতীয় দলের তারকা ফুটবলার ডিওগো জোতা স্পেনে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। বয়স হয়েছিল মাত্র ২৮ বছর। সঙ্গে ছিলেন তার ছোট ভাই আন্দ্রে সিলভা, তিনিও এই দুর্ঘটনায় নিহত হন। জোতার অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ফুটবল বিশ্ব। কিন্তু একটাই প্রশ্ন বারবার ঘুরে আসছে—স্পেনে কী করছিলেন জোতা?
জানা গেছে, সম্প্রতি একটি ছোটখাটো অস্ত্রোপচার হয়েছিল জোতার। ফুসফুসে অপারেশনের কারণে চিকিৎসকরা তাকে বিমান ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলেন। তাই বাধ্য হয়ে গাড়ি চালিয়েই ইংল্যান্ড থেকে নিজ শহর পর্তুগালের পোর্তো গিয়েছিলেন তিনি। একইভাবে ইংল্যান্ডে ফিরছিলেন গাড়ি চালিয়েই। তাঁর গন্তব্য ছিল সান্তান্দার, সেখান থেকে ফেরিতে করে ব্রিটিশ আইলসে যাবার পরিকল্পনা ছিল।
সোমবার লিভারপুলের প্রাক-মৌসুম অনুশীলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই ভাগ্য ডেকে আনে নির্মম পরিণতি।
দুর্ঘটনাটি ঘটে স্পেনের জামোরা প্রদেশের এ-৫২ মহাসড়কে। নিজের চালানো ল্যাম্বরগিনি গাড়ির একটি চাকা হঠাৎ ক্ষতিগ্রস্ত হলে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে পড়ে। মুহূর্তেই আগুন ধরে যায় গাড়িতে। ঘটনাস্থলেই নিহত হন ডিওগো জোতা ও তার ভাই। কোনো সুযোগই ছিল না বাঁচার।
জোতার মৃত্যুতে কেবল লিভারপুল নয়, গোটা ফুটবল বিশ্ব হারাল এক প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে। মাত্র এক মাস আগেই প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতেছিলেন তিনি লিভারপুলের হয়ে। তার পরপরই জুনে জয় করেন নেশনস লিগ শিরোপা। সদ্য বিবাহিত জোতা নতুন জীবনের শুরুতেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
২০ নম্বরের অন্তিম গল্প
জোতা লিভারপুলের হয়ে খেলতেন ২০ নম্বর জার্সি পরে। কাকতালীয় হলেও, ক্লাবের ইতিহাসে ২০তম লিগ শিরোপাটি আসে তার হাত ধরেই। লিভারপুল তাকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় ২০ নম্বর জার্সি চিরতরে উঠিয়ে রেখে। শুধু তাই নয়, ২০২৭ সাল পর্যন্ত চুক্তির অধীনে থাকা জোতার পরিবার তার বাকি পারিশ্রমিকও পাবে বলে জানিয়েছে ক্লাব।
জোতার মৃত্যু শুধু একটি ক্যারিয়ারের নয়, একটি সম্ভাবনার, এক স্বপ্নের, এক ভালোবাসার অপূর্ণ সমাপ্তি। তার মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবন কতটা অনিশ্চিত।
স্মৃতিতে রয়ে যাবে জোতা। লিভারপুল ও পর্তুগালের হয়ে তার দাপট, মাঠে তার ছন্দ, আর সেই অকাল বিদায়ের অতৃপ্তি।