রাজনীতি

সাবেক এমপি রশীদুজ্জামান গ্রেপ্তার

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৪
সাবেক এমপি রশীদুজ্জামান গ্রেপ্তার
খুলনা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রশীদুজ্জামান মোড়লকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ভোর রাতে পটুয়াখালীর মহিপুর এলাকা থেকে র‌্যাব-৬ ও র‌্যাব-৮ এর যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, সহিংসতা ও বিস্ফোরক দ্রব্যের তিনটি মামলায় রশীদুজ্জামান এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে তদন্তের পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
রশীদুজ্জামান মোড়ল একজন দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। ফলে, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তবে সেই নির্বাচনে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এর পরেও তিনি দলের সাথে যুক্ত থাকেন এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ আসন (কয়রা-পাইকগাছা) থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
 ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার পতন হয়। এই আন্দোলনের ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এর তিন দিন পর, ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। সেই থেকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা, মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় রশীদুজ্জামান মোড়লকেও গ্রেপ্তার করা হলো।
রশীদুজ্জামানের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বিস্ফোরক দ্রব্যের মামলায় অভিযোগ রয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হওয়ায়, আন্দোলনের সময় তার নাম একাধিকবার সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে উঠে আসে। সেই সময় বিভিন্ন সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিক মামলা হয়, যার মধ্যে তিনটি মামলায় তিনি সরাসরি এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে চিহ্নিত হন।
রশীদুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর তদন্ত চলছে এবং পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা শিগগিরই নেওয়া হবে। গ্রেপ্তারের পর তাকে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাকে আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে তা তদন্তের জন্য আরও সময় লাগবে এবং আদালত থেকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক নেতাই আত্মগোপনে চলে গেছেন বা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। রশীদুজ্জামান মোড়ল এই সময় আত্মগোপনে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এবং অনেকেই ভারতে পালানোর চেষ্টা করছেন। এর আগেও পলাতক অবস্থায় থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রশীদুজ্জামান মোড়লের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো তাকে সরাসরি জেলে প্রেরণ করার কারণ হতে পারে।