ফুটবলে খেলোয়াড়দের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম হলো রেডকার্ড। আর সেই আতঙ্কের সাথে জড়িয়ে, 'ব্যাড বয়' এর খাতায় নাম নিজেদের লিখিয়েছেন কিছু কুখ্যাত ফুটবলার।
বাজে ট্যাকেল, ফাউল ও মারামারির মারপ্যাঁচে আটকে, অসংখ্যবার লাল কার্ড দেখেছেন তারা। তাদের ফুটবল ক্যারিয়ারটাই যেন লাল কার্ডের এক গোলকধাঁধা।
একটা সময় ফুটবলারদের কাছে, মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম ছিল জেরার্ডো বেডোয়া।
নিজের ফুটবল ক্যারিয়ারে ৪৬টি লাল কার্ড দেখে, লালকার্ডের আতুড়ঘরে পরিণত হয়েছিলেন, এই কলম্বিয়ান মিডফিল্ডার।
মাঠে তার এগ্রেসিভ আচরণ ও খেলার ধরণ দেখে, সমর্থকরা তার নাম দিয়েছিলেন 'দ্যা বিস্ট'।
নিজের ৬০১ ম্যাচের ফুটবল ক্যারিয়ারে, প্রায় ১৩টি ক্লাবের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন বেডোয়া। কলম্বিয়া জাতীয় দলের হয়েও, ৪৯টি ম্যাচ খেলেছেন বিশ্বের সর্বোচ্চ লালকার্ডধারী এই তারকা।
ফুটবল বিশ্বে লাল কার্ডের রাজা হিসেবেই, কুখ্যাতদের তালিকায় রাজ করছেন, দ্যা বিস্ট- জেরার্ডো বেডোয়া।
সদ্য আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়া স্প্যানিশ তারকা, সার্জিও রামোসর নামের পাশেও রয়েছে অসংখ্য লাল কার্ড।
ফুটবল ইতিহাসে ২য় সর্বোচ্চ ২৮ বার লাল কার্ড দেখেছেন এই স্প্যানিয়ার্ড। একজন ডিফেন্ডার হিসেবে রামোস যতটা দুর্দান্ত, ঠিক ততটাই দুর্দান্ত প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে।
লা-লিগার ইতিহাসে রেকর্ড সর্বাধিক ২০ বার লাল কার্ড দেখেছেন রামোস। এছাড়াও এল-ক্লাসিকোর মতো মেগা ইভেন্টেও তাকে পাঁচবার মাঠছাড়া করা হয়েছে।
তবে জাতীয় দলে রামোসের গল্পটা পুরোই উল্টো। স্পেনের হয়ে খেলা ১৮০ ম্যাচের কোনোটিতেই লাল কার্ড দেখেননি এই তারকা ডিফেন্ডার।
সাবেক ফরাসি কিংবদন্তি সিরিল রুলও ছিলেন একজন ভয়ংকর ট্যাকেলার। মিডফিল্ডার হয়েও তার ফুটবল ক্যারিয়ারে রয়েছে ২৭টি লাল কার্ড।
মাঠে নির্মম আচরণ ও ঝগড়াটে স্বভাবের কারণে কুখ্যাত ছিলেন এই ফরাসি মিডফিল্ডার।
ফ্রান্সের লিগ ওয়ানে রেকর্ড ১৯টি লাল দেখেছেন সিরিল রুল। নিজের ৩৬৬ ম্যাচের ক্লাব ক্যারিয়ারে ২৭টি লাল কার্ডের পাশাপাশি ১৮৭টি হলুদ কার্ড রয়েছে তার।
তবে ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে কখনোই মাঠে নামতে পারেননি এই ক্ষেপাটে মিডফিল্ডার।
সিরিলের মতোই হট টেম্পারের জন্য পরিচিত ছিলেন সাবেক স্প্যানিশ সেন্টার ব্যাক অ্যালেক্সিস রুয়ানো ডেলগাডো।
লা-লিগায় নিজের ৩২১ ম্যাচের ক্যারিয়ারে গেতাফে ও ভ্যালেন্সিয়ার মতো দলের হয়ে মাঠে নেমেছেন এই ডিফেন্ডার।
বুটজোড়া তুলে রাখার আগে ডেলগাডো নিজের নামের পাশে যুক্ত করেন ২২টি লাল কার্ড।
অযাচিত ট্যাকেল ও রগচটা স্বভাবের কারণে রেফারিদের অঘোষিত শত্রুতে পরিণত হয়েছিলেন এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। কুখ্যাতির বঞ্চনাকে সঙ্গী করেই ক্যারিয়ার সমাপ্ত হয় তার।
লাল কার্ডধারীদের তালিকায় ৫ম স্থানটি দখল করে আছেন উরুগুয়ের প্রাক্তন ডিফেন্ডার পাওলো মন্টেরো। তার ক্যারিয়ারে লাল কার্ডের সংখ্যা ২১টি।
মাঠে বদমেজাজী স্বভাবের কারণে তাকে সাইডবেঞ্চে ফেরত পাঠানো হয়েছে অসংখ্যবার।
ইতালিয়ান জায়ান্ট ক্লাব জুভেন্টাসের হয়ে ১৮৬ ম্যাচ খেলা এই সেন্টার ব্যাক উরুগুয়ের হয়ে মাঠে নেমেছেন ৬১ বার।
তবে মাঠে নানা আক্রমণাত্মক কর্মকান্ডের কারণে কুখ্যাতদের লিস্টে ঠাঁই হয়েছে তার।
এতো এতো লাল কার্ড, তাদের ক্যারিয়ার কুখ্যাতির কালিমা জুড়ে দিয়েছে। তারপরেও নিজ দলের সমর্থকদের কাছে তারা 'হিরো' হয়েই থাকবেন।
কেননা দলের স্বার্থে নিজেদের উজাড় করে দিতে গিয়েই, তাদের বারবার মাঠ ছাড়তে হয়েছে। দিনশেষে এই লাল কার্ডগুলোই যেন, দলের প্রতি তাদের ভালোবাসার প্রতীক হয়ে রয়েছে।