ইউরোপিয়ান ফুটবলে সম্ভাবনাময় তরুণদের তালিকায় এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম নিঃসন্দেহে নিকো পাজ। ২১ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডারকে দলে টানতে ইংলিশ জায়ান্ট টটেনহাম হটস্পার দিয়েছে ৭০ মিলিয়ন ইউরোর বিশাল অঙ্কের প্রস্তাব — যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার সমান! তবে তার বর্তমান ক্লাব কোমো সেই প্রস্তাব সরাসরি ফিরিয়ে দিয়েছে।
কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোমো? তার জবাবটা দিয়েছেন স্বয়ং নিকো পাজ—মাঠেই।
সেরি ‘আ’-তে মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই কোমোর হয়ে অভিষেক হয় এই তরুণের। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী লাজিও। আর প্রথম ম্যাচেই যেভাবে আলো ছড়িয়েছেন নিকো, তাতে বোঝা যায়, কোমোর সিদ্ধান্ত ভুল ছিল না একটুও।
ম্যাচের ৪৭তম মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে একজনকে কাটিয়ে, তিন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে দারুণ এক থ্রু পাস বাড়ান ডৌভিকাসের উদ্দেশে। নিখুঁত সময়জ্ঞান ও চতুর পাসিংয়ের মাধ্যমে গড়া এই আক্রমণে কোমোর হয়ে প্রথম গোলটি করেন ডৌভিকাস।
কিন্তু এখানেই থামেননি পাজ। ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পায় কোমো। পোস্টের ডান দিক থেকে বাঁ পায়ের নিখুঁত কার্ভে বল জড়িয়ে দেন জালে। গোলরক্ষক লাফিয়েও সেই বল ছুঁতে পারেননি। মেসির ট্রেডমার্ক ফ্রিকিক গোলের মতোই ছিল এই শট—নিখুঁত কার্ভ, সময়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ আর সাহসী এক্সিকিউশন।
ডি মারিয়ার একদিন পরেই এই গোলটি করেন নিকো, যিনি বর্তমানে জাতীয় দলে ডি মারিয়ার পজিশনেই নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছেন। স্কোয়াডে ঠাঁই পাওয়া ছাড়াও তার পারফর্ম্যান্স বলছে—তিনি শুধু স্কোয়াডের অংশ নন, বরং ভবিষ্যতের আর্জেন্টিনার মধ্যমণি হয়ে উঠার পথে।
ম্যাচে গোল, অ্যাসিস্ট এবং প্রভাব বিস্তার করে জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কারও। মাঠে ১০ নম্বর জার্সিতে খেলা নিকোর পারফরম্যান্স বারবারই মেসিকে মনে করিয়ে দিয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের।
তাকে দলে নিতে আগ্রহী ক্লাবের অভাব নেই। তবে কোমো পরিষ্কার করে দিয়েছে—নিকো পাজ শুধু একজন খেলোয়াড় নয়, বরং তাদের ভবিষ্যতের সম্পদ। সেজন্যই ৭০ মিলিয়ন ইউরোর মতো লোভনীয় প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিতে দ্বিধা করেনি তারা।
বিশ্ব ফুটবলে নতুন তারকা হিসেবে উত্থান শুরু করে দিয়েছেন নিকো পাজ। সময়ই বলে দেবে, ভবিষ্যতে কোথায় গিয়ে থামবে এই উড়ান। তবে এক thing নিশ্চিত — এই পাজকে আটকানো এত সহজ হবে না।