মাত্র ২২ বছর বয়সে নিজের জীবনসঙ্গীনি খুঁজে নেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান নাজমুল হাসান শান্ত
২০২০ সালে রাজশাহীর মেয়ে সাবরিন সুলতানা রত্নার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। রত্না তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
তবে শান্তর সাথে তার পরিচয় স্কুলজীবনেই। দু'জনে রাজশাহীতে একই স্কুলে পড়তেন। তখনই মন দেয়া-নেয়া আর পরিনয়।
অনূর্ধ্ব-১৭ দলে ক্রিকেট খেলার সময় রাজশাহী সুগার মিলস স্কুলে ক্লাস টেন এর ছাত্র ছিলেন শান্ত। রত্না তখন ক্লাস নাইনের ছাত্রী।
রত্নাকে দেখে ভালো লাগে তার। প্রেমের প্রস্তাবটা তাই তিনিই দিয়েছিলেন। রত্না তখন জানতো না যে, শান্ত অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে খেলছেন। এমনকি জানতো না তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার সম্পর্কেও।
তবুও শান্তর প্রস্তাবে না করেননি তিনি। দীর্ঘ চার বছর চুটিয়ে প্রেম করেন দুজন। এরপর সম্পর্কের কথা পরিবারকে জানান তারা। দুই পরিবারই তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়।
পরবর্তীতে দুই পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে পারিবারিকভাবেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা দুজন।
ক্যারিয়ারের সুসময়ে যেমন আনন্দে মেতে থাকেন, তেমনি দুঃসময়েও সবসময় স্বামীর পাশে থাকেন রত্না।
বর্তমানে বেশ ভালোই কাটছে দু'জনার সংসার। কয়েকমাস আগেও স্ত্রীকে সঙ্গী করে মালদ্বীপ ভ্রমণে গিয়েছিলেন শান্ত।
সমুদ্রের নীল জলরাশিতে স্ত্রীকে নিয়ে আনন্দে মেতেছিলেন। সেসব ভালো লাগার মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দী করে ইনেস্টাগ্রামে আপলোডও করছেন এই ব্যাটসম্যান।
ঘরোয়া ক্রিকেট ও বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে বেশ দাপিয়ে ব্যাটিং করতেন শান্ত। যুব ক্রিকেটে হয়েছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, যা এখনও তার দখলেই।
তাইতো, বয়সভিত্তিক দল পেরোনোর পর পরই তাকে জাতীয় দলে নিয়ে আসা হয়। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই নিউজিল্যান্ডে দলের সাথে রাখা হয় তাকে।
তবে ঘরোয়া ও বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের তুলনায় জাতীয় দলে তার পারফরম্যান্স হতাশাজনক।
বহুবার সুযোগ পেয়েও নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি তিনি। বোর্ড তার উপর যতবারই আস্থা রেখেছেন ততবারই ব্যর্থ হয়েছেন।
ভবিষ্যতে আলো ছড়াবেন এই ভেবে বোর্ডও তার উপর আস্থা হারায়নি এখনো। তাই গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডেও রাখা হয় তাকে।
সেসময় তার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বিস্ময়ের সীমা ছিল না ক্রিকেট মহলে। সবার মনেই প্রশ্ন ছিল, কোন বিবেচনায় নাজমুল হোসেন শান্ত দলে জায়গা পেলো!
অবশ্য বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করে দিয়ে সমালোচকদের কড়া জবাবই দিয়েছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
বর্তমানে শান্ত বাংলাদেশ দলে মোটামুটি স্থায়ী। ভারতের বিপক্ষে সিরিজেও রাখা হয়েছে তাকে। যদিও এখানে তার ফর্ম খুব একটা ভালো নয়।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি আছে। গেম সিচুয়েশন, প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় তার পারফর্ম্যান্সকে অনেক বেশি প্রভাবিত করে।
সমালোচনাও তাকে মানসিকভাবে চাপে রাখে। টেকনিক্যাল ইস্যুর পাশাপাশি শান্তর মানসিক অবস্থা তাঁর ক্যারিয়ারকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
তবে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো আগলে রাখছেন তরুণ ক্রিকেটারকে। ফর্ম যেমনই হোক, তাকে আরও সুযোগ দেওয়ার পক্ষে তিনি।
তার মতে, তরুণদের ওপর ভরসা করতেই হবে। তারা আস্থার প্রতিদান দিয়ে ভালো করতে শুরু করলেই কোচ-নির্বাচকরা খুশি হবেন। কারণ আমরা এরকম কিছুই চাই।
টেকনিক্যাল ফল্ট শোধরানোর পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটের জন্য শান্তকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা জরুরি। সেটি করতে পারলে দল তার কাছ থেকে ভালো কিছু পাবে বলে আশা করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।