প্রথম বারের মতো সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল টিম। এ উপলক্ষে পুরো দেশে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
দেশবাসী কে ঐতিহাসিক এই বিজয় উপহার দেয়ার পর নারী ফুটবল দলের জন্য একে একে আসছে আসছে আর্থিক পুরস্কারের ঘোষনা।
এখন পর্যন্ত যার পরিমান দাড়িয়েছে এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা। এছাড়া এলাকাভিত্তিক খেলোয়াড় দের জন্য আলাদা পুরস্কারের ঘোষনা এসেছে।
প্রথমবারের মতো সাফ ট্রফি জিতে বুধবার দেশে ফিরেছে নারী ফুটবল দলের মেয়েরা। এর আগেই তাদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
দেশের সবচেয়ে ধনী ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গনমাধ্যমের কাছে জানান,
‘ঐতিহাসিক অর্জন এবং দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে গোটা জাতিকে গর্বিত করেছে নারী ফুটবল দল।'
তাদের চেষ্টার প্রতি সমর্থন এবং প্রশংসা জানাতে বিসিবির পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেন তিনি।
এরপর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা নারী দলকে অনুপ্রাণিত করতে এগিয়ে আসে দেশের অন্যতম বৃহৎ নির্মাণসংস্থা তমা গ্রুপ।
ট্রফি জিতে আসা মেয়েদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কারের ঘোষনা দিয়েছে তারা। বিমানবন্দরে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের সামনে এই ঘোষণা দিয়েছেন তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক।
যিনি একইসাথে বাংলাদেশ ফুটবম ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিসিবি এবং তমা গ্রুপের পর সাফজয়ী জন্য পুরস্কার ঘোষনার মিছিলে যোগ দিয়েছেন এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান- শারমিন সালাম। নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাবিনাদের ৫০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনিও।
বুধবার, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার এবং বাফুফের সিনিয়র সহ সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী গনমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেছেন এই তথ্য।
সাবিনা সানজিদাদের ঐতিহাসিক এ অর্জনে আনন্দে ভাসছে গোটা দেশ। শুভেচ্ছা অভিনন্দনের পাশাপাশি ক্রমাগত বাড়ছে পুরস্কারের ঘোষনা।
ইতিমধ্যে সাফজয়ী নারী দলকে সংবর্ধনা এবং উপহার দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান- বসুন্ধরা গ্রুপ।
টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলা ১৪ ফুটবলারের মধ্যে ১৩ জনই ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের নিজস্ব ক্লাব বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়। সেজন্য ধারণা করা হচ্ছে বড় আকারের উপহার দেয়া হবে এই গ্রুপের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে সাফ জয়ী নারী ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য বিভিন্ন অঞ্চল ভিত্তিক পুরস্কারও দেয়া হচ্ছে। বিজয়ী মেয়েদের আট জন ছিলেন কলসিন্দুর থেকে উঠে আসা।
ইতিমধ্যে তাদের পরিবারকে ফুল এবং মিষ্টি খাইয়ে বরণ করেছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন। একইসাথে কলসিন্দুরের আট খেলোয়াড়ের পরিবারকে ৫০ হাজার করে মোট চার লাখ টাকা অনুদানও দেওয়া হয়েছে।
একইরকম ভাবে স্থানীয় তিন খেলোয়াড়ের জন্য পুরস্কারের ঘোষনা দিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন।
শিরোপাজীয় দলের তিনজন সদস্য এবং একজন সহকারী কোচের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলায়। তাদের সবাইকে এক লক্ষ টাকা করে আর্থিক পুরস্কার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির ডিসি প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস।
অপরদিকে পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ পারফরমেন্স করা আসা নারী দলের গোলরক্ষক রূপনা চাকমার ঘর বানিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ন হবার পর মঙ্গলবার ফুল, মিষ্টি এবং দেড় লাখ টাকা উপহার দিতে তার বাড়িতে গিয়েছিলেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক।
এ সময় সাথে থাকা সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে রুপনা চাকমার জরাজীর্ণ ঘরের ছবি। যা মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে।
রূপনা চাকমার ঘরের দৃশ্য নজরে আসার পর তার জন্য নতুন ঘর নির্মানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে।