রাজনীতি

পণ্যের দাম কেন কমাতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার, জানালেন সাকি

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
পণ্যের দাম কেন কমাতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার, জানালেন সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বৃহস্পতিবার বরিশাল নগরীর অশ্বিনীকুমার হলে অনুষ্ঠিত এক গণসংলাপে পণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, বাজারে দ্রব্যমূল্য আকাশ ছুঁয়েছে, এমনকি ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অতীতের সিন্ডিকেটের প্রভাবের কারণে পণ্যের দাম কমাতে পারছে না। তিনি সরকারকে আহ্বান জানান, দ্রব্যমূল্য কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং গ্রাম থেকে পণ্য আনার পথে যে চাঁদাবাজি হচ্ছে, তা বন্ধ করতে।
সাকি তার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন যে, চাতাল ও মিলমালিকরা কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন, এবং সরকার এ বিষয়ে এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান, এই ধরনের অনিয়ম বন্ধ করে বাজারের স্থিতিশীলতা ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।
গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা বলেন, বর্তমান অবস্থার জন্য শুধু গত ১৫ বছরের শাসনকেই দায়ী করা উচিত নয়, বরং দেশের গত ৫৩ বছরের শাসনব্যবস্থার মধ্যে সমস্যা বিদ্যমান। তিনি উল্লেখ করেন যে, দেশের সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যিনিই ক্ষমতায় আসেন, তিনি সমস্ত ক্ষমতার মালিক হয়ে ওঠেন। ফলে গরিব জনগণ ন্যায্যতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে এমন একটি ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য হবেন। এজন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদটি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব রাখেন সাকি।
তার বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকা উচিত। সংসদকে দুই কক্ষবিশিষ্ট করার প্রস্তাব দেন তিনি, যাতে দুই কক্ষের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো সরকার যেন গণমাধ্যমের ওপর খবরদারি করতে না পারে—সে বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
সাকি আরও উল্লেখ করেন, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দরকার। জনগণের অধিকার ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনার দাবি জানান তিনি।
এই গণসংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল ও কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম আমজাদ হোসেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলের বরিশাল জেলার সমন্বয়কারী দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু, যিনি সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন জেলা নির্বাহী সমন্বয়কারী আরিফুর রহমান মিরাজ ও পেশাজীবী পরিষদের ডা. মিজানুর রহমান।
সংলাপটি বরিশালবাসীর মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে সাকির বক্তব্য প্রশংসিত হয়েছে।