রাজনীতি

দেশের জাতির পিতা কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি হতে পারে না: মামুনুল হক

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
দেশের জাতির পিতা কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি হতে পারে না: মামুনুল হক
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক সম্প্রতি ভৈরবের হাজী আসমত কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত এক গণসমাবেশে বলেন, “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কোনো একক দলের সম্পত্তি নয়, এবং স্বাধীনতার নেতৃত্ব কোনো ব্যক্তির একক ইজারাদারি হতে পারে না।” তিনি আরো উল্লেখ করেন, দেশের জাতির পিতা কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি হতে পারেন না। তার এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি জাতির পিতার প্রশ্নে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
মামুনুল হক বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের সময় হাজারও ছাত্র-জনতাকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।” তার দাবি, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, এবং তাকে দ্রুত দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, “হাসিনার পরিবারের সদস্যরা এবং সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে।” তিনি বেগমপাড়ার উদাহরণ দিয়ে অর্থ পাচারের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
অগাস্ট আন্দোলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মামুনুল বলেন, “আন্দোলনকে বিফল করা যাবে না। পরাজিত শক্তি এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে, এবং এদের থেকে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।” তিনি অভিযোগ করেন যে, বর্তমান সরকার ফ্যাসিবাদের পথে এগোচ্ছে, এবং যদি জনগণ সতর্ক না হয় তবে তারা পুনরায় ফ্যাসিবাদের কবলে পড়বে। তিনি বিশেষভাবে আবু সাঈদ মুগ্ধসহ হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের কথা উল্লেখ করে তাদের আত্মত্যাগ বৃথা না যাওয়ার আহ্বান জানান।
মামুনুল হকের বক্তব্যে পরিষ্কারভাবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ ফুটে ওঠে। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া মানে খুনিকে আশ্রয় দেওয়া।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি প্রতিবেশী দেশের নীতি ও অবস্থানকেও কটাক্ষ করেন। তার ভাষায়, “ভারত সরকারকে এই অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, নয়তো তারা অপরাধীদের আশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত হবে।”
গণসমাবেশে মামুনুল হক কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হিসেবে মাওলানা আতাউল্লার নাম ঘোষণা করেন এবং এলাকার উন্নয়নের জন্য জনগণের কাছে তাকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমাদের প্রার্থী আতাউল্লা এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন। তাকে ভোট দিয়ে এলাকার উন্নয়ন নিশ্চিত করুন।”
এই গণসমাবেশে মামুনুল হকের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি আশিকুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহম্মদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ফজলুল হকসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
মামুনুল হকের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।