আন্তর্জাতিক

১৫ মিনিটে বাংলাদেশ দখলের হুমকি পশ্চিমবঙ্গের নেতার

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
১৫ মিনিটে বাংলাদেশ দখলের হুমকি পশ্চিমবঙ্গের নেতার
পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের এক নেতার সাম্প্রতিক মন্তব্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য সীমান্ত খুলে দিলে বাংলাদেশ দখল করা সম্ভব। এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
১১ ডিসেম্বর, বুধবার, পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি টিংকুর রহমান বিশ্বাস তার এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “বর্ডার খুলে দিন ১৫ মিনিটের জন্য, বাংলাদেশ দখল করে নেব। আমাদের পুলিশ বা ফোর্সও লাগবে না। পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলমানরাই যথেষ্ট।”
তার এই বক্তব্যে বাংলাদেশি রাজনীতিকদের প্রতি কটাক্ষের ইঙ্গিত ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে যারা নিজেদের জাতির পিতাকে সম্মান দিতে জানে না এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ, তারা বাংলাদেশ দখলের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের কাছ থেকে কোনো ভালো কিছু আশা করতে পারে না।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের কথিত নিপীড়নের অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বিতর্কিত মন্তব্য নতুন নয়। তৃণমূল কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেপি নেতারাও প্রায়ই বাংলাদেশ ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। তবে টিংকুর রহমান বিশ্বাসের মতো সরাসরি দখলের হুমকি দিয়ে বক্তব্য বিরল।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এদিন কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। প্রয়োজনে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।”
টিংকুর রহমানের বক্তব্য নিয়ে দুই দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। সমালোচকরা এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং উত্তেজনা ছড়ানোর প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তার এই বক্তব্য কেবল বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে নয়, বরং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন যে, কিছু রাজনৈতিক শক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “ভুয়া ভিডিও এবং ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এটি প্রতিহত করতে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।”
মমতা বন্দোপাধ্যায় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার কথা বললেও তার দলের এক নেতার এমন উস্কানিমূলক বক্তব্য দলটির ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তবে মমতা দাবি করেছেন, “আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি। কিছু ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে, যা আমরা বরদাশত করব না।”
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ জনগণের ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। তারা ভারতের রাজনৈতিক নেতাদের এই ধরনের উত্তেজনাকর মন্তব্য বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।