বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যবসা সফল সিনেমার তালিকায় ৫ নাম্বারে আছে "শান্ত কেন মাস্তান"।
১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া অপরাধ ধর্মী এই ছবিটি এখনো পর্যন্ত আয় করেছে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি। অপরদিকে এটি বানাতে খরচ হয়েছিল মাত্র ৯০ লাখ টাকা।
চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মনতাজুর রহমান আকবর ও আরমান প্রোডাকশনের ব্যানারে প্রযোজনা করেছেন আরমান।
এতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছেন কালজয়ী অভিনেতা মান্না। তার বিপরীতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শাহনাজ।
এছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নাসরিন আক্তার, দিলদার, কাবিলা, হুমায়ুন ফরিদি, মিশা সওদাগর, ড্যানিরাজ সহ আরো অনেকে।
"শান্ত কেন মাস্তান" মূলত ছিল ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র জিদ্দি এর রিমেক।
বাংলা ছাড়াও ১৯৯৮ সালে তামিল ভাষায় পুনঃনির্মান করা হয়েছিল এটি, যার নাম দেয়া হয়েছিল ধার্মা।
কালজয়ী এক বাংলা সিনেমার নাম "আম্মাজন"।
১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া অপরাধধর্মী নাট্য চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছিলেন কাজী হায়াৎ।
এতে দেখানো হয়েছিল মায়ের প্রতি একজন সন্তানের অকৃত্রিম ভালোবাসার নানা রুপ। "আম্মাজান" দেখার পর চোখের জল ফেলেনি এমন সিনেমাপ্রেমী খুব কমই আছে।
সেই সময়ে দর্শকমহলে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এটি। ব্যবসা সফল বাংলা চলচ্চিত্রে তালিকাতেও শুরুর দিকেই আছে এর অবস্থান।
এখনো পর্যন্ত এটি আয় করেছে ১১ কোটি টাকা। অপরদিকে "আম্মাজান" নির্মানে খরচ হয়েছিল ১ কোটি দুই লাখ টাকা।
মুক্তির আগের দিনই ১ কোটি ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রযোজনা ও সঙ্গীত সত্ব বিক্রি করেছিলেন এই ছবির প্রযোজক। অর্থাৎ মুক্তির একদিন আগেই মুনাফা হয়েছিল ২ লক্ষ টাকা।
ছবিটিতে মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শবনাম, আর ছেলের চরিত্রে ছিলেন জনপ্রিয় নায়ক মান্না।
এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৌসুমী, আমিন খান, ডিপজল, মিজু আহমেদ সহ আরো অনেকে।
১৯৯৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল সালমান শাহ অভিনীত সিনেমা ‘সত্যের মৃত্যু নেই’। সেরা ব্যবসাসফল বাংলা সিনেমার তালিকায় তিন নাম্বারে আছে এটি।
১৫৬ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি আয় করেছে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সিনেমা এটি।
সালমান শাহ এর মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন পর মুক্তি পেয়েছিল "সত্যের মৃত্যু নেই"। তাই পর্দার সামনে বসে প্রিয় অভিনেতাকে স্মরণ করে অনেকেই অঝোর ধারায় কেদেছেন।
সালমান ছাড়াও এতে অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন আলমগীর, শাবানা, শাহনাজ, মিশা সওদাগর, রাইসুল ইসলাম আসাদ ও রাজীব।
আর পরিচালনায় ছিলেন ছটকু আহমেদ এবং যৌথভাবে রচনা করেছেন ছটকু আহমেদ ও পানাউল্লাহ আহমেদ। প্রযোজনা কোম্পানি হিসেবে ছিল আনন্দ মুভিজ।
ব্যবসা সফল বাংলা সিনেমার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে " স্বপ্নের ঠিকানা। এতেও প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ।
১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটি এখনো পর্যন্ত আয় আয় করেছে ১৯ কোটি টাকা।
শুরুতে এটি শুধু ঢাকার বাইরে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে দর্শকদের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ঢাকা সহ সারাদেশে মুক্তি পেলে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
৯০ এর দশকে ঢালিউডে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন সালমান শাহ। যার মূলে ছিল ব্যাতিক্রম ধর্মী স্টাইল এবং রোমান্টিকতা।
এম এ খালেক পরিচালিত "স্বপ্নের ঠিকানায ছবিতে সালমান শাহ ছাড়াও অভিনয় করেন শাবনূর, সোনিয়া, রাজীব, প্রবীর মিত্র, আবুল হায়াত, দিলদার, ডলি জহুর সহ আরো অনেক কলাকুশলী।
এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবি ‘বেদের মেয়ে জোসনা’।
১৯৮৯ সালে মুক্তির পর গত ৩৩ বছরে এর আয়কে ছুতে পারেনি অন্য কেউ।
ছবিটি নির্মানে মোট ব্যয় হয়েছিল মাত্র ২০ লাখ টাকা। অপরদিকে সেই সময়ে মোট ১ হাজার ২০০টি হলে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমা আয় করেছে ২০ কোটি টাকার বেশি।
এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন অঞ্জু ঘোষ এবং তার বিপরীতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন
ফারজানা ববি, সাইফুদ্দিন, নাসির খান, শওকত, আকবর, প্রবীর মিত্র, রওশন জামিল এবং দিলদার। আর পরিচালনায় ছিলেন তোজাম্মেল হক বাবুল।
বাংলাদেশে চলচ্চিত্রটির ব্যপক সফলতার পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও পুননির্মাণ করে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
ছবির পাশাপাশি ‘বেদের মেয়ে জোসনা আমায় কথা দিয়েছে’ শিরোনামের গানটি তখনকার সময়ে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।