বলিউড

মিঠুন চক্রবর্তীর প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী হেলেনার মৃত্যু

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪
মিঠুন চক্রবর্তীর প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী হেলেনার মৃত্যু
বলিউড ও টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর প্রথম স্ত্রী অভিনেত্রী হেলেনা লিউক সম্প্রতি মারা গেছেন। হেলেনা লিউক যুক্তরাষ্ট্রে ৩ নভেম্বর ২০২৪ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হেলেনার মৃত্যুর খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন তার বন্ধু, নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী কল্পনা আয়র। এই খবরে শোকাহত হয়েছে বলিউডসহ তার অনুরাগীরা। মিঠুনের সঙ্গে হেলেনার বিয়ে মাত্র চার মাস স্থায়ী ছিল এবং এটি বলিউডের এক চর্চিত সম্পর্ক হিসেবেই থেকে গেছে।
১৯৮৫ সালে অমিতাভ বচ্চনের সিনেমা ‘মর্দ’-এ অভিনয় করেছিলেন হেলেনা, যা তাকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। তবে মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তার সম্পর্কের গল্পটা ছিল সংক্ষিপ্ত এবং জটিল। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে হেলেনা এই সম্পর্ক নিয়ে কিছু খোলামেলা মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "মিঠুন আমাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে তিনি আমার জন্য আদর্শ মানুষ। তবে আমার এখন শুধু মনে হয়, এমনটা না হলেই ভালো হতো।" এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি ইঙ্গিত দেন যে, তাদের সম্পর্কটি তার জন্য সুখকর ছিল না এবং তিনি সেটি জীবন থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন।
মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে তার বিবাহিত জীবন নিয়ে নানা সময়ে নানা গুজব রটেছে। একবার গুজব রটে যে, হেলেনা নাকি মিঠুনের কাছে আবার ফিরে যেতে চান। তবে সেই গুজব মিথ্যা প্রমাণ করে হেলেনা বলেছিলেন, "আমি তার কাছে কখনো ফিরে যাব না, যদি তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হন তাও। আমি তার কাছ থেকে কখনো খোরপোশও চাইনি। আমাদের সম্পর্ক ছিল দুঃস্বপ্নের মতো, আর সেই দুঃস্বপ্ন অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।"
মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে হেলেনার সম্পর্কের শেষ হওয়ার পর বলিউডে বেশ কিছু জটিল সম্পর্কের খবর রটে। মিঠুনের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়ে হেলেনার অসন্তুষ্টি এবং মানসিক বিভ্রান্তি অনেক সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে। এমনকি মৃত্যুর আগে হেলেনা একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে লিখেছিলেন, "আজব লাগছে। মিশ্র অনুভূতি এবং ঠিক জানি না কেন, বিভ্রান্ত লাগছে।" এটি ইঙ্গিত দেয় যে, হয়তো তার জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোও মানসিকভাবে সহজ ছিল না।
প্রসঙ্গত, হেলেনার আগে মিঠুনের বিয়ের কথা পাকাপাকি হয়েছিল নৃত্যশিল্পী মমতা শংকরের সাথে। তবে নানা কারণে সেই সম্পর্ক আর স্থায়ী হয়নি এবং দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়। এরপর মমতা শংকর চন্দ্রদয় ঘোষকে ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ে করেন। মিঠুন ও হেলেনা একে অপরকে বিয়ে করেছিলেন ১৯৭৯ সালে। তবে সেই সম্পর্কও মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই বিচ্ছেদে গড়ায়।
১৯৭৯ সালেই মিঠুন চক্রবর্তী দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন আরেক অভিনেত্রী যোগিতা বালিকে। যোগিতার সাথে মিঠুনের বিবাহিত জীবন এখনও স্থায়ী এবং সুখী। এই বিয়ে তাদের জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে, যা হেলেনার সঙ্গে তার সম্পর্ক থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বলিউডে বহু সম্পর্কের জটিলতার মাঝে মিঠুন-হেলেনা সম্পর্ক এক ভিন্ন এবং বেদনাদায়ক অধ্যায় হিসেবে থেকে যায়। তাদের সংক্ষিপ্ত বিবাহিত জীবনের কাহিনি আজও বলিউডে আলোচিত।
মিঠুনের জীবনে হেলেনার প্রভাব এবং তার জীবনের পরিবর্তনশীল দিকগুলোই প্রমাণ করে যে, অনেক সম্পর্কই কখনো কখনো সঠিক সময়ে সঠিক অবস্থায় টেকে না। হেলেনা লিউকের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বলিউডের এক সময়কার আলোচিত অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে, যা শোবিজ দুনিয়ায় মনে করিয়ে দেয় যে জীবনের প্রতিটি সম্পর্কই সবার জন্য সমান সুখের নয়।