এভিয়েশন

এক বছরে বিমান বাংলাদেশ লাভ করেছে ৪৩৬ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩
এক বছরে বিমান বাংলাদেশ  লাভ করেছে ৪৩৬ কোটি টাকা

অবশেষে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। গত এক বছরে তাদের মুনাফা হয়েছে প্রায় ৪৩৬ কোটি টাকা। 

এমনকি গেল বছর নিজেদের আয়ে প্রথমবারের মত এয়ারক্র্যাফট ক্রয় করেছে তারা। কোম্পানিটি এক বছরে ৩০ লাখ যাত্রী পরিবহনেরও মাইলফলক ছুয়েছে। 

নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারনে দীর্ঘদিন ধরেই লোকসান গুনে আসছিল দেশের একমাত্র  সরকারি মালিকানাধীন এয়ারলাইন অপারেটরটি।

১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের। সে সময় কোম্পানিটির ছিল মাত্র একটি নিজস্ব ও কয়েকটি লিজ নেওয়া এয়ারক্রাফট। 

তবে বর্তমানে বিমান বাংলাদেশের বহরে ড্রিমলাইনার-787 এর মত বিলাসবহুল উড়োজাহাজসহ মোট ২১ টি এয়ার ক্র্যাফট রয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি নিজেদের কেনা।

৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এক বক্তব্যে চলতি বছর এশিয়ার সেরা দশ এয়ারলাইনসে জায়গা করে নেওয়ার ঘোষানা দেন সিইও শফিউল আজিম। 

দায়িত্ব পাওয়া এই পরিচালকের আশা এবার কাংখিত সেরা দশে জায়গা করে নিতে পারলে পরের বছর বিমান বাংলাদেশ সেরা তিনেও থাকবে। 

মুলত এদিন তিনি গিয়েছিলেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশের সদ্য নির্মিত একটি হ্যাঙ্গার পরিদর্শনে।

এখানে বিমানের বিভিন্ন কারিগরি কাজ করা হয়। অর্থাৎ অবতরনের পর বিমানে কোন যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গেলে তা ঠিক করে উড্ডয়ন যোগ্য করা হয় এই হ্যাঙ্গারে।

বর্তমানে হ্যাঙ্গারটিতে যেকোন বিমানের সি চেক করা সম্ভব। প্রত্যেকটি বিমানের জন্য এই চেক করানো বাধ্যতামুলক প্রতি তিন বছরে একবার। 

আগে যা করতে বিদেশি প্রকৌশলিদের দিতে হতো প্রায় ২২ কোটি টাকা। বর্তমানে দেশীয় ইঞ্জিনিয়ারেরা দেশে বসেই করছেন সি চেক। ফলে সাশ্রয় হচ্ছে অর্থ। 

এছাড়া এই হ্যাঙ্গারের অধীনে গড়ে তুলা হয়েছে একটি ফরেন হ্যান্ডেলিং সেকশন। যা বাংলাদেশে আসা যেকোন বিদেশি বিমানের কারিগরি সমস্যর সমাধান করে। 

সেখান থেকেও আয় হচ্ছে বিপুল পরিমান অর্থ। বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্য সহ ৩০টি রুটে সেবা দিয়ে আসছে। এছাড়া শীঘ্রই চালু করা হবে জাপান- বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট।

সিইও শফিউল আজিম জানিয়েছেন তাদের নতুন কেনা এয়ারক্র্যাফট শীঘ্রই যুক্ত হবে সার্ভিসে। এটি আসলে আগামী হজ মৌসুমে নিজস্ব বিমানে করেই হাজী পরিবহন করা হবে। 

বিমান বাংলাদেশের গত বছর যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭১ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতিটি ফ্লাইটে যেন মোট সিটের ৭১ শতাংশ যাত্রী থাকে।

তবে সে লক্ষ্যমাত্রা তারা ছাড়িয়ে গিয়েছে । ২০২২ সালে বিভিন্ন রুটে পরিচালিত হওয়া প্রায় সবগুলো ফ্লাইটে ৭৪ শতাংশের বেশি সিটে ছিল যাত্রী। 

এছাড়া নতুন বছরের শুরুতে আরো ঘোষনা দেওয়া হয়েছে চলতি বছরে বিমান বাংলাদেশের সব টিকেট করা হবে ওয়েব বেইজড।

অর্থাৎ কোন এজেন্সি ছাড়াই এখন যাত্রীরা ঘরে বসে সরাসরি টিকেট কাটতে পারবেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী আকাশ যাত্রার চাহিদা বাড়ছে। 

ফলে সময়ের সাথে এই খাতে বাড়বে প্রতিযোগিতা। তাই প্রতিদ্বন্ধীদের থেকে ভাল সার্ভিস দিতে পারলে আরো ভালো করার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এয়ারলাইনস গুলো বিশ্বজুড়ে ভালো করছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহারন কাতার এয়ারওয়েজ, ফ্লাই এমিরেটস এবং টার্কিশ এয়ারলাইনস।