এভিয়েশন

চালু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম সরাসরি ফ্লাইট

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২
চালু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম সরাসরি ফ্লাইট

প্রথমবারের মত বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মাঝে চালু হতে যাচ্ছে সরাসরি ফ্লাইট। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই এশিয়ার এই দুই দেশের মধ্যে আকাশপথে যাতায়াত শুরু করবে ভিয়েতনামের বিমান সংস্থা ভিয়েতজেট এয়ার।   


হ্যানয়-ঢাকা রুটে ১০টি চার্টার্ড ফ্লাইট দিয়ে কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে এই এয়ারলাইন্সটির। পরবর্তীতে, যাত্রী চাহিদার নিরিখে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। শুধু পর্যটনই নয়, দু দেশের মধ্যে ধীরে ধীরে চালু করা হবে বাণিজ্যিক ফ্লাইট।     


বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে পর্যটন ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যেই ভিয়েতনাম ট্যুরিজম এর তরফ থেকে এই উদ্যোগ  নেয়া হয়েছে।  


২ মাসের মধ্যে বিমান যাতায়াত চালু হয়ে গেলে, দু দেশের পর্যটকরা মাত্র ৪৫ হাজার টাকা খরচ করেই ঢাকা-হ্যানয় রুটে ভ্রমণ করতে পারবেন।


এই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য বিশেষ ধরণের সাশ্রয়ী ভিসা সুবিধা চালু করেছে দেশটি।


সেই সাথে ভিয়েতনামের ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান ভিক্টোরিয়া ট্যুর এর পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে নানা ধরনের ভ্রমণ প্যাকেজ।


এই বিষয়টি ভিয়েতনামের সাথে যৌথভাবে তদারকি করবে ভিক্টোরিয়া ট্যুরের বাংলাদেশের অংশীদার প্রতিষ্ঠান ইনোগ্লোব ট্রাভেল ও ট্যুরস লিমিটেড।    


ভিয়েতনামের সাথে ফ্লাইট চালুর ফলে পর্যটন ও বাণিজ্য খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের জন্য।  দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের অর্থনীতিই লাভবান হবে এতে।


এতদিন দুই দেশের মধ্যে আকাশপথে সরাসরি যোগাযোগ ছিল না। ফলে অন্য একটি দেশে ট্রানজিট নিয়ে যাতায়াত করতে হতো। এতে অর্থ এবং সময় দুটোই  খরচ হয় বেশি। নতুন এই ব্যবস্থাটি  সময় ও অর্থ সাশ্রয়ী হিসাবে পরিলক্ষিত হবে।  


সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে বাংলাদেশের পর্যটকরা অপেক্ষাকৃত কম খরচে ভ্রমণ করতে পারবেন ঐতিহ্যসমৃদ্ধ এই দেশটিতে। বিপরীতে, ভিয়েতনাম থেকেও আমাদের দেশে সহজে আসতে পারবেন ভিনদেশি পর্যটকরা।


এতে জোরদার হবে দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক, সমৃদ্ধ হবে পর্যটন খাত। আন্তর্জাতিক সম্পর্কে সূচনা হবে নতুন দিগন্তের।     


ভিয়েতনাম এশিয়ার পর্যটন আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় দেড় লাখ পর্যটক ভিয়েতনাম ছুটে যান কেবলমাত্র ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যিক নগরী হো চি মিন সিটি আর রাজধানী শহর হ্যানয়ের সৌন্দর্য দেখতে।  


দেশটিকে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির দেশ বলা হয়। এখানে ৫০ টি ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে। আর পুরো দেশে ৭০ টির মত ভিন্ন ভিন্ন ভাষা প্রচলিত।


এদেশের মানুষ বেশ সহজ সরল, প্রথম সাক্ষাতেই বয়স, চাকরি, বৈবাহিক অবস্থা-সবকিছু নিয়েই আলাপ করে ফেলে। অধিবাসীরা কফি খুব পছন্দ করে, কিন্তু সাধারণভাবে এটি পান করেনা।   


বরফ আর কনডেন্স মিল্ক মিশিয়ে কফি বানায় তারা। অনেকসময় চাও পান করে থাকে বরফ মিশিয়ে। আর যেকোন পানীয় পান করার সময় গ্লাসের নিচে কিছুটা রেখে দেয়, সবটুকু পান করাকে তারা অশোভনীয় মনে করে।     


মোটরবাইক ভিয়েতনামিদের খুবই পছন্দ। প্রতি পরিবারেই একাধিক বাইক রাখা হয়। এই কারণেই দেশটিতে মোটরবাইকের সংখ্যা জনসংখ্যার দ্বিগুণ বা তারও বেশী।   


জাদুঘর আর মন্দিরে পরিপূর্ণ রাজধানী শহর হ্যানয় দেশটির ঐতিহ্যের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। মেকং নদীর তীরের দেশটিতে অবস্থিত ওয়েস্ট লেক অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ।


চারপাশে রয়েছে বিলাসবহুল হোটেল আর রেস্তারা। দেশটির লটে অবজারবেশন ডেস্ক একটি ৬৫ তোলা ভবন যেখান থেকে পুরো শহরটিকেই একবারে দেখে নেয়া যায়।  


নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে থেকে যেমন ভিয়েতনামে পর্যটক যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে তেমনি, এদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও আশাবাদী ভিয়েতনামের পর্যটন খাতের পরিচালকরা।    


বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প প্রসারের ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়ে তারা মন্তব্য করেছেন যে, এ দেশের প্রকৃতি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং অধিবাসীদের আন্তরিকতা পর্যটন সম্প্রসারণের পথে বিশেষ সহায়ক।