নতুন করে আলোচনায় আসা সাবেক নারী ক্রিকেটার জাহানারা আলমের যৌন নিপীড়ন ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিযোগপ্রাপ্ত সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার ও নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম। বর্তমানে চীনে নারী দলের প্রধান কোচ হিসেবে কর্মরত মঞ্জুরুল গণমাধ্যমে সঙ্গে কথা বলায় ওই অভিযোগগুলোকে “ভিত্তিহীন ও মিথ্যা” বলে দাবি করেছেন এবং দেশের মঞ্চে কোনো তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছেন।
১৯৯৯ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত জাতীয় পুরুষ দলের হয়ে ১৭টি টেস্ট ও ৩৪টি ওয়ানডে খেলা বাঁহাতি পেসার মঞ্জুরুল ইসলাম অবসরের পর বিসিবির অধীনে বিভিন্ন কোচিং ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন। ২০২০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত তিনি জাতীয় নারী দলের নির্বাচক ও বিভিন্ন সিরিজে দলের ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় মঞ্জুরুল দাবি করেছেন, জাহানারা আলমের উত্থাপিত সব অভিযোগই ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। তিনি বলেন, একদমই না। কোথায় বলেছি, কবে বলেছি? এটার প্রমাণটা কোথায়! এবং জানান, দেশে ফিরে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতেও তিনি প্রস্তুত আছেন। আমি যেকোনো সময় বাংলাদেশে এসে বসতে প্রস্তুত আছি। যখন বলবে, তখনই আসব। আমাকে তদন্ত কমিটি যা বলবে, তা–ই করব, তিনি যোগ করেন।
জাহানারা ইউটিউবে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, জাতীয় নারী দলের একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনৈতিক আচরণ ঘটেছে— মাঝে মধ্যে ম্যানেজার হিসেবে থাকা মঞ্জুরুল তাঁর কাছে নারী স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাইতেন, যা সাধারণত দলের ফিজিওরই জানা থাকা উচিত। জাহানারা বলেন, উনি আমার কাছে এসে কাঁধে হাত দিয়ে বলেছিলেন—‘তোর পিরিয়ড কত দিন চলছে? পিরিয়ড শেষ হলে জানাস, তখন ডাকব।’
এই অভিযোগের বিপরীতে মঞ্জুরুল বলেছেন, ম্যানেজার হিসেবে এসব তথ্য আমি ফিজিওর মাধ্যমে পেতাম; কখনোই সরাসরি খেলোয়াড়কে এসব জিজ্ঞেস করিনি। জাহানারা আরও অভিযোগ করেছেন যে, মঞ্জুরুল উৎসাহ দেওয়ার নামে খেলোয়াড়দের শারীরিকভাবে স্পর্শ করতেন, এমতেও মঞ্জুরুল কড়াভাবে ইন্তর্ক করেছেন এবং বলেছেন, এ ধরনের কোনো আচরণ আমার পক্ষ থেকে কখনো হয়নি।
মঞ্জুরুল অভিযোগ করেছেন, নিজের কঠোর আচরণ— নিয়মশৃঙ্খলা ও খাদ্যনিয়মে কড়াকড়ির কারণে হয়তই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে কেউ কেউ। তিনি বলেন, আমার প্রধান সমস্যা ছিল নিয়মশৃঙ্খলা আর আইনকানুনি উদ্যোগ, বাইরের খাবার খেলে ওদের ক্ষতি হত—আমি তাই কঠোর থাকতাম। যদি এই কারণে অভিযোগ হয়, তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই, তদন্তে যেটা প্রমাণিত হবে তা মেনে নেব।
উল্লেখ্য, জাহানারা এই বিষয়ে বিসিবি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করার কথা বলেন, তবে তাঁর দাবি অনুযায়ী তখন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মঞ্জুরুল অবশ্য জানান, তাঁকে কখনোই যৌন হয়রানির বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানান হয়নি।
বিসিবির পক্ষ থেকে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।