খেলা

কেমন হবে ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ? কোথায় বসবে আসর

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২
কেমন হবে ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ? কোথায় বসবে আসর

মাত্রই শেষ হয়েছে কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ এর আসর। ক্রীড়াপ্রেমীরা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন পরবর্তী আয়োজনের অপেক্ষায় দিন গননা।

৪ বছর পর ২০২৬ সালে বিশ্ব ফুটবলের এই মহাযজ্ঞ বসবে তিনটি দেশে। কাতারের মতো এত বেশি অর্থ খরচ না হলেও মাঠের লড়াই হবে আরো বেশি জমজমাট।

ভিন্ন মোড়কে আয়োজিত হবে নতুন বিশ্বকাপ। পরিবর্তন আসবে বেশ কিছু নিয়মে। আয়োজক দেশ বাড়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পাবে অংশগ্রহনকারী দলের সংখ্যাও।

১৯৯৮ সাল থেকে ৩২টি দেশ নিয়ে মাঠে গড়িয়েছে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ। ২০২৬ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হবে ৪৮টি। তাই হোস্ট কান্ট্রি বাড়ার পাশাপাশি বৃদ্ধি পাবে ভেন্যু এবং সময়সীমা।

দল সংখ্যা বাড়ানোর পিছনে ফিফার উদ্দ্যেশ, মানসম্মত ফুটবলকে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়া। প্রতিযোগী দলের সংখ্যা বাড়লে অনেক দেশই বিশ্বকাপ নিয়ে আগ্রহী হবে। তারা নিজেদের ঘরোয়া ফুটবলের মান বাড়ানোর চেষ্টা করবে।’

যৌথভাবে ফুটবলের ২৩তম বিশ্ব আসর আয়োজন করবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা। ৩টি রাষ্ট্রের মোট ১৬টি শহরের ১৬টি স্টেডিয়ামে হবে বিভিন্ন দলের লড়াই।

এরমধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১১টি স্টেডিয়াম আছে আমেরিকায়। ফাইনাল সহ অন্যান্য ম্যাচের মধ্যে অধিকাংশই হবে এখানে। এছাড়া মেক্সিকো এবং কানাডায় আছে যথাক্রমে ৩টি এবং ২টি করে স্টেডিয়াম। 

ফুটবল বিশ্বকাপের সাক্ষী হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের শহরগুলো হচ্ছে লস অ্যাঞ্জেলেস, হিউস্টন, মায়ামি, নিউ ইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকো, আটালান্টা, বোস্টন, ফিলাডেলফিয়া, সিয়াটল, ডালাস এবং 
কানসাস সিটি।

আসন্ন গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের জন্য মেক্সিকো থেকে নির্বাচন করা হয়েছে মেক্সিকো সিটি, গুয়াদালাহারা ও মন্টেরে শহরকে। এছাড়া কানাডাবাসী ফুটবলের মহারন উপভোগ করতে পারবেন ভ্যানকুভার ও টরন্টোতে বসে।

ফিফা জানিয়েছে, ২০২৬ সালে তারা পুনরায় পূর্ববর্তী শিডিউলে ফিরে যাবে। অর্থাৎ জুন এবং জুলাই মাসেই অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের আগামী আসর। তবে এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত কোন তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।

২০২৩ সালের প্রথমভাগেই শুরু হবে বাছাইপর্ব। ইউরোপ অঞ্চল থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৬টি দল চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। অপরদিকে ওশেনিয়া থেকে বিশ্বমঞ্চ মাতাতে আসবে মাত্র ১টি দেশ।

এছাড়া দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া এবং কনকাকাফ থেকে অংশ নিবে যথাক্রমে ৬, ৯, ৮ ও ৬ টি করে দল। বাকি দুটো দল আসবে ইউরোপ ছাড়া ৫টি মহাদেশ নিয়ে আয়োজিত একটি প্লে-অফ টুর্নামেন্ট থেকে।

প্রথমবারের মতো ৪৮ দলের বিশ্বকাপ কোন ফরম্যাটে হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। এগুলো নিয়ে বর্তমানে চলছে নানারকম আলোচনা।

৩ ধরনের মডিউল নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ফিফা। সেখান থেকে যাচাই বাছাই করে যে কোন একটিকে মনোনীত করা হবে। সংস্থাটি জানিয়েছে ২০২৩ সালের মধ্যেই আসবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। 

ধারণা করা হচ্ছে, তিন দলের ১৬টি গ্রুপ বা চার দলের ১২টি গ্রুপ হতে পারে। ফিফা প্রথমে ভেবেছিল, তিনটি করে দল নিয়ে ১৬টি গ্রুপ তৈরি করা হবে। 

প্রতি গ্রুপ থেকে দুটি করে দল নক আউটের যোগ্যতা অর্জন করবে। তবে সদ্য সমাপ্ত কাতার বিশ্বকাপে একের পর এক অঘটন দেখে সেই প্রস্তাব নিয়ে আপাতত বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

মডেল ঠিক না হওয়ায় টুর্নামেন্ট শেষ হতে কতদিন লাগবে সেটিও নিশ্চিত নয়। গ্রুপ গুলো কিভাবে সাজানো হবে তার উপর নির্ভর করে মেক্সিকো, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাচ সংখ্যা হতে পারে ৮০ কিংবা ১০৪ টি।

বিশ্ব ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আয়োজনের লোগো, পোস্টার এবং মাস্কটের ডিজাইন এখনো লঞ্চ করা হয়নি। আগামী সাড়ে তিন বছরের মধ্যে ক্রমান্বয়ে সামনে আসবে এগুলো। 

২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ফুটবল ভক্তদের পাশাপাশি তীব্র সমালোচনা করা পশ্চিমা বিশ্বের মন জয় করে নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

এমন দুর্দান্ত সফল টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে কোন হিসেব ছাড়াই দুই হাতে টাকা খরচ করেছে তারা। চলমান শতাব্দীতে কাতারের অর্থ ব্যয়ের রেকর্ড অন্য কেউ টপকাতে পারবে কিনা সেটি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

তবে ২০২৬ সালেই অংশগ্রহণকারী দলের দিক দিয়ে তেল সমৃদ্ধ দেশটিকে পিছনে ফেলবে মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা। ২০২২ সালের চেয়ে ১৬টি দল বেশি খেলবে ২০২৬ ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপে।

অর্থাৎ মোট ৪৮টি দেশ মাঠে নামবে সোনালী ট্রফি জয়ের লড়াইয়ে। তাই মাঠের যুদ্ধটাও হবে আরো বেশি জমজমাটা। ফুটবলপ্রেমীরা এখন থেকেই তাদের মহারন দেখার অপেক্ষায় দিন গুনছেন।