জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, জোট গঠন করা অপরাধ নয়। বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলই নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো না কোনো সময় জোট গঠন করেছে। তাই শুধু জাতীয় পার্টিকে দায়ী করা রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে দলটির এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবির প্রেক্ষাপটে দলের অবস্থান জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, “জাতীয় পার্টি কোনো বিপ্লবী দল নয়, এটি নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচনী কৌশল হিসেবে আমরা জোট করি এবং সংসদে যাই। আজ যারা আমাদের দোষারোপ করছেন, তারাও একসময় আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন করেছেন। এমনকি ২০০৮ সালে জাপা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে, আবার ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গেও বৈঠক করেছে। তবে বিএনপির অনাগ্রহের কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।”
জামায়াতের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা কখনো কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই। আওয়ামী লীগ যখন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে, তখনও জাতীয় পার্টি তার বিরোধিতা করেছিল। কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।”
তিনি আরও দাবি করেন, প্রশাসনে ইতিমধ্যে দলীয়করণের অভিযোগ উঠেছে। কে বিএনপির লোক, আর কে জামায়াতের লোক—তা দেখে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আনিসুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয় ঐক্য খুবই জরুরি। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টিই সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা।”
সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “৫ আগস্ট দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন মোড় এসেছে। অনেকে এটিকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলতে চান। তবে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার অনুরোধ, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা করা উচিত নয়।”
তিনি আরও বলেন, গত এক বছরে তরুণ প্রজন্ম যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল, তা পূরণ হয়নি। বরং সারা দেশে চর দখলের মতো বাজার, টার্মিনাল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও জমি দখল বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ প্রমুখ।