জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অনেক উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ (লিয়াজোঁ) করছেন এবং নিজেদের সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থানের পথ খুঁজছেন।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন, “উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবতেছে। এটা আমাদের অনেক পোহাতে হচ্ছে এবং পোহাতে হবে। কিন্তু তারা যদি বিশ্বাস করত যে তাদের নিয়োগকর্তা ছিল গণ–অভ্যুত্থানের শক্তি, রাজপথে নেমে জীবন দেওয়া ও আহত সাধারণ মানুষজন, তাহলে এই বিচ্যুতি হতো না।”
নাহিদ ইসলামের এ মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর সাক্ষাৎকারের ভিডিও ক্লিপ ও ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়েছে।
একাত্তর টেলিভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় পোস্ট করা একটি ফটোকার্ডে আজ রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি প্রতিক্রিয়া এবং ১ হাজার ৪০০টি মন্তব্য এসেছে। ব্যবহারকারীদের কেউ নাহিদ ইসলামের বক্তব্যের পক্ষে মত দিয়েছেন, আবার কেউ সমালোচনাও করেছেন।
গত জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক দফা দাবিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে তিনি ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পান। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি সরকার থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন করেন এবং দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন।
ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে যোগ দেওয়া মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখনো উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন,
“রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং যাঁরা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাঁদের অনেককে বিশ্বাস করাটা আমাদের ভুল ছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলকে আমরা যে আস্থা রেখেছিলাম, সেই জায়গায় আসলে আমরা প্রতারিত হয়েছি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছে অথবা গণ–অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিট্রে (প্রতারণা) করেছে। সময় এলে আমরা এদের নামও উন্মুক্ত করব।”