ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল। আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ প্রকাশ করা হয়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট ভিপি–জিএস–এজিএসসহ মোট ২৮টি পদে অংশ নিয়ে ২৩টিতে জয় পায়। অন্যদিকে কোনো পদেই জয় পায়নি ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, যতক্ষণ না প্রশাসন নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে পরিষ্কার অবস্থান জানাচ্ছে, ততক্ষণ তাঁরা নির্বাচনের বৈধতা দিচ্ছেন না।
১১টি অনিয়মের অভিযোগ
প্যানেলের নেতারা যে ১১টি অনিয়মের কথা উল্লেখ করেছেন তা হলো—
- ভোটারকে নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ভোট দেওয়া ব্যালট পেপার সরবরাহ, ভোটার তালিকায় জাল স্বাক্ষর এবং ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদানের হার নিয়ে অসামঞ্জস্যতা।
- ব্যালট পেপারে কোনো ক্রমিক নম্বর না থাকা এবং ব্যবহৃত-বাতিল হওয়া ব্যালটের সংখ্যা গোপন রাখা।
- কোন প্রেস থেকে ব্যালট ছাপানো হয়েছে তা গোপন রাখা; নীলক্ষেতে অরক্ষিত অবস্থায় বিপুলসংখ্যক ব্যালট পেপার পাওয়া।
- ভোট গণনার সময় প্রার্থী ও ভোটারদের অবহিত না করে সফটওয়্যার ও মেশিন যাচাই করা।
- প্রার্থীদের প্রস্তাবিত অনেক পোলিং এজেন্টকে বাদ দেওয়া এবং প্রক্রিয়া গোপন রাখা।
- সময়মতো পোলিং এজেন্টদের আইডি কার্ড না দেওয়ায় অনেকেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি।
- পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ৮টি কেন্দ্রের পরিবর্তে ভোটের দিন হঠাৎ ১৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ।
- প্রশাসনের পক্ষ থেকে পোলিং অফিসার নিয়োগ; অনেকের নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পর্কে ধারণা না থাকা।
- বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও গার্ল গাইডসের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা এবং বহিরাগতদের প্রবেশে সহায়তা।
- ভোট গণনায় এজেন্টদের ভূমিকা সীমিত রাখা, ত্রুটিপূর্ণ গণনা এবং প্রতিবাদে এজেন্টদের স্বাক্ষর না করে কেন্দ্র ত্যাগ।
- অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার, মার্কারপেনের অভাবে বলপেন দিয়ে ভোট গ্রহণ এবং আঙুলে অস্থায়ী কালি ব্যবহারের কারণে একাধিক ভোট দেওয়ার শঙ্কা।
ছাত্রদল–সমর্থিত জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামীম বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে একটি বিশেষ মহল তাঁদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে। অভিযোগগুলো নিয়ম মেনে প্রশাসনকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, "ইচ্ছাকৃত কালক্ষেপণের মাধ্যমে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ ইতিহাসে প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে।"