রাজনীতি

‘সংবিধানকে কবর দেওয়ার কথা শুনলে কষ্ট লাগে’

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
‘সংবিধানকে কবর দেওয়ার কথা শুনলে কষ্ট লাগে’
সংবিধানকে কবর দেওয়ার কথা বলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে এককভাবে নিজেদের করে নিতে চায়। শহিদের রক্তের ওপর লেখা সংবিধানকে কবর দেওয়ার কথা শুনলে কষ্ট লাগে— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এবং বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, “শহিদের রক্তের ওপর লেখা সংবিধানকে এভাবে কবর দেওয়ার কথা বলা দুঃখজনক। এটি বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে এবং জাতীয় ঐক্যের পথে অন্তরায় হতে পারে।” তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান এবং উল্লেখ করেন যে, এককভাবে কোনো পক্ষ আন্দোলনের মালিকানা দাবি করলে জনমনে বিভেদ সৃষ্টি হবে।
বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে মির্জা আব্বাস বলেন, “আমরা কখনো ক্ষমতায় যাওয়ার কথা বলি না। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচন এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা।”
একই দিনে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের কথা জানায়। প্ল্যাটফর্মটির প্রতিনিধি হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “বাহাত্তরের সংবিধান মুজিববাদি এবং এটি অপ্রাসঙ্গিক। আমাদের ঘোষণাপত্রে এই সংবিধানের কবর রচিত হবে।” একই সঙ্গে আওয়ামী লীগকেও অপ্রাসঙ্গিক করার ঘোষণা দেন তিনি।
প্ল্যাটফর্মটি আগামী মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাদের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে। তবে তাদের বক্তব্যকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
বাহাত্তরের সংবিধান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ভিত্তিতে তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তা সংশোধন করা হয়েছে। সংবিধান সংশোধন বা পুনর্লিখনের প্রস্তাব নতুন নয়, তবে ‘কবর দেওয়া’ শব্দ ব্যবহার করে সেটিকে বাতিল করার প্রস্তাব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
মির্জা আব্বাসের বক্তব্যে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। দলটি সংবিধান সংশোধনের পক্ষে থাকলেও, এটি সম্পূর্ণ বাতিলের বিরুদ্ধে। এ ধরনের মন্তব্যকে তিনি ‘ফ্যাসিবাদের ভাষা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।