জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি ও তাদের মিত্র দলগুলো একত্রিত হয়েছে। দলগুলো ২০২৫ সালের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়। এজন্য তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনমুখী সংস্কার বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছে। দলগুলোর মতে, নির্বাচনী সংস্কারে অযথা সময়ক্ষেপণ করা ঠিক হবে না। প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো বর্তমান সরকার করবে, আর নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকার বাকি সংস্কার সম্পন্ন করবে।
বিএনপির নেতারা মনে করেন, নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রচেষ্টা চলছে। এতে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রয়োজনীয় আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে ৪ থেকে ৬ মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনমুখী সংস্কার সম্পন্ন করে নিরপেক্ষ ভোট আয়োজন করতে হবে।
সরকারের ওপর নির্বাচনি চাপ বাড়াতে বিএনপি বড় ধরনের সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। এর লক্ষ্য হলো দেশব্যাপী নির্বাচনী আমেজ তৈরি করা। গত কয়েকদিনে বিএনপি ২৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতারা বলেছেন, “যদি দ্রুত নির্বাচন না হয়, তাহলে দেশের অস্থিরতা বাড়বে এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আরও গভীর হবে।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও অন্যান্য মিত্র দলগুলোও দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। জোটের নেতারা বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন না হলে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হবে। আমরা দ্রুত জনগণের নির্বাচিত সরকার চাই। শেখ হাসিনার মতো আরেকটি সরকার চাই না, যা ফ্যাসিবাদের পথ তৈরি করবে।
বিএনপি মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনমুখী সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। দলের নেতারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যা নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করবে। তাই তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি এক জনসভায় জনগণের উদ্দেশে বলেন, যদি সত্যিকার পরিবর্তন চান, তবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার এবং ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করতে হবে।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করা জরুরি। সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করা ঠিক হবে না। শেখ হাসিনার মতো আরেকটি ফ্যাসিবাদী সরকার আমরা চাই না। গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করতে প্রস্তুত আছি।
বিএনপি ও মিত্র দলগুলো একমত যে ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন না হলে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তাদের লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা। এজন্য তারা মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি ও প্রচার চালিয়ে নির্বাচনের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
বিএনপির দাবি, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করা প্রয়োজন। দেরি হলে তা দেশের জন্য আরও অস্থিরতা বয়ে আনবে বলে দলটি সতর্ক করেছে।