রাজনীতি

আ.লীগসহ ১৪ দলকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার পরামর্শ পার্থর

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৪
আ.লীগসহ ১৪ দলকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার পরামর্শ পার্থর
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ সম্প্রতি আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। পার্থর এই মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, যা ভবিষ্যতের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
আন্দালিব রহমান পার্থ তার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত গণহত্যার দায়ে তাদের বিচার শেষ হয়। তার মতে, একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকাকালীন সময়ে এসব দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, "রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এবং গণহত্যার দায়ে বিচারের আগ পর্যন্ত তাদের সব ধরনের নির্বাচন থেকে দূরে রাখা উচিৎ।"
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পার্থ আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী দলগুলোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এটি স্পষ্ট যে, তিনি বর্তমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে গুরুতর আপত্তি তুলেছেন, যা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলতে পারে।
সংলাপের সময় পার্থ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তুলে ধরেন—বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরানোর জন্য একটি কমিশন গঠনের দাবি। তিনি উল্লেখ করেন যে, দেশের সম্পদ পাচার হয়ে যাওয়া বড় একটি সমস্যা, এবং এর সমাধান করতে হলে সরকারের উচিত বিশেষ একটি কমিশন গঠন করা। তার মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব।
আন্দালিব রহমান পার্থ তার বক্তব্যে আরও বলেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনমুখী সংস্কার হওয়া জরুরি। তবে, তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে এ ধরনের সংস্কার এমনভাবে করা উচিত নয়, যা মনে হয় এটি নির্বাচিত সরকারের পক্ষে নেওয়া হচ্ছে। তার মতে, বিগত তিনটি নির্বাচন নিয়ে পর্যালোচনা করা এবং সেগুলোর সম্ভাব্য সংস্কার নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। এই ধরনের নির্বাচনমুখী সংস্কার দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে আরও গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ করে তুলতে পারে।
এর আগে, একই সংলাপে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), গণফোরাম, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। তারা সবাই দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে বিএনপি ছাড়া অন্যান্য দলও নতুন নির্বাচনী পদ্ধতির পক্ষে মত প্রকাশ করেছে।
আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার প্রস্তাব মূলত রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও জটিল করেছে। পার্থর মতে, দেশে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন প্রয়োজন, যা বর্তমান ক্ষমতাসীন দলগুলোকে প্রভাবিত করবে। তবে, এটি শুধুমাত্র একটি প্রস্তাব হিসেবে থাকলেও, এ ধরনের মন্তব্য ভবিষ্যতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করার সম্ভাবনা রাখে।