রাজনীতি

ছাত্র রাজনীতি হবে সৎ ও দেশপ্রেমিক নেতাদের নেতৃত্বে

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৪
ছাত্র রাজনীতি হবে সৎ ও দেশপ্রেমিক নেতাদের নেতৃত্বে
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, দেশের অন্যতম ছাত্র সংগঠন, শনিবার প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে। রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাগিচা রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এই সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ছাত্রশিবিরের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বক্তব্য দেন। দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা এবং রাজনৈতিক বাধা পেরিয়ে ছাত্রশিবির আবারও সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সভায় মঞ্জুরুল ইসলাম ছাত্র রাজনীতির গঠনমূলক পরিবর্তনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমরা এমন এক ছাত্র রাজনীতি চাই, যেখানে সৎ, দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক নেতাদের নেতৃত্বে আদর্শের ভিত্তিতে কাজ করা হবে।” তার বক্তব্যে তিনি সততার গুরুত্ব এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে নৈতিকতা ও আদর্শিক মান বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। মঞ্জুরুল ইসলামের মতে, শুধু ক্ষমতার লড়াই নয়, বরং দেশের উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য কাজ করাই ছাত্র রাজনীতির আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রশিবিরের লক্ষ্য হলো এমন একটি সহনশীল ও সংস্কৃতিমনস্ক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে সব ছাত্র সংগঠন পরস্পরের প্রতি সম্মান দেখাবে এবং সহযোগিতা করবে। বর্তমান ছাত্র রাজনীতিতে যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত দেখা যায়, তা দূর করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মানসিকতা তৈরি করা জরুরি।
এই মতবিনিময় সভায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম সভা পরিচালনা করেন এবং অন্যান্য নেতারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। কমিটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের মধ্যে ছিলেন দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আব্দুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মিজবাহ উদ্দীন, এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক আহমেদ তাওফিক। এই নেতারা সংগঠনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন।
ছাত্রশিবিরের এই নেতারা দেশের ছাত্রদের জন্য একটি উত্তম রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দেন। তারা বলেন, রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও, ছাত্র সংগঠনগুলোকে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে এবং সমাজের উন্নয়নের জন্য যৌথভাবে কাজ করতে হবে। ছাত্রশিবিরের নেতারা সহনশীলতা, মর্যাদা, এবং সংস্কৃতিমনস্কতাকে ছাত্র রাজনীতির ভিত্তি হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেন।
মঞ্জুরুল ইসলাম আরও বলেন, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক চাপ এবং গ্রেফতার, জেল-জুলুমের কারণে ছাত্রশিবিরের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে ছাত্রশিবির আবারও সক্রিয় হতে প্রস্তুত এবং তাদের লক্ষ্য একটি শক্তিশালী ও উন্নত রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলা। তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতে ছাত্র রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এবং ছাত্ররা রাজনৈতিক আদর্শের ভিত্তিতে দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখতে পারবে।
তিনি আরও জানান, ছাত্রশিবিরের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা ও আদর্শিক মূল্যবোধ গড়ে তোলা, যা তাদের ভবিষ্যতের সৎ ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। ছাত্র রাজনীতিতে যেন কোনো ধরনের অনৈতিকতা এবং সহিংসতা না থাকে, সেই লক্ষ্যেই তারা কাজ করবেন।