রাজনীতি

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত: আওয়ামী লীগ

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৪
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত: আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগকে "কল্পনাপ্রসূত" এবং "মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক" আখ্যা দিয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করাকে বেআইনি, অসাংবিধানিক এবং মধ্যযুগীয় আচরণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে, যেখানে তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের মাধ্যমে গণহত্যা সংঘটিত হয়। বিশেষ করে গত জুলাই-আগস্ট মাসের কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং তার পরবর্তী সময়ে ঘটে যাওয়া সহিংসতাকে কেন্দ্র করে এই অভিযোগ ওঠে।
আওয়ামী লীগ এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত এবং ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেছে। দলটি বলেছে, এটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি প্রতিশোধমূলক ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আওয়ামী লীগ একটি পোস্টে জানিয়েছে, "এই বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং এই বিচারের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য প্রতিশোধ নেয়ার লক্ষ্যে মিথ্যা ও কাল্পনিক তথ্যের ভিত্তিতে এই মামলা করা হয়েছে।"
আওয়ামী লীগ আরও দাবি করেছে যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াকে অবমূল্যায়ন এবং দেশের উন্নয়নের পথকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ তাদের পোস্টে গণহত্যার আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা তুলে ধরে জানায় যে, গণহত্যা কনভেনশন অনুযায়ী এটি একটি বিশেষ অপরাধ, যেখানে একটি জাতি, গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়কে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। দলটি দাবি করে যে, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সহিংসতা, যেখানে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে, প্রকৃত গণহত্যার উদাহরণ হতে পারে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক ও জাতীয়ভাবে নিন্দিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বলেছেন, ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রণীত আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে শেখ হাসিনা দেশকে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত করেছিলেন। দলটির মতে, এই নতুন মামলাটি সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত এবং একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
আওয়ামী লীগ জানায়, “জনগণ এই ষড়যন্ত্রমূলক উদ্যোগকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে।” দলটি আরও জানায় যে, দেশের সংবিধান অনুযায়ী কোনো অসাংবিধানিক শক্তির ক্ষমতা দখল করার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। অতীতে অসাংবিধানিকভাবে যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।
আওয়ামী লীগ সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করে বলেছে যে, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭খ অনুযায়ী সংবিধান লঙ্ঘন করলে তার শাস্তি সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। দলটি তাদের পোস্টে স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, অসাংবিধানিক ও বেআইনি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। অন্যথায়, জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে এবং ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।