জাতীয় সংগীতের সুরের সাথে আলোক ঝলমল করে উঠলো পুরো ভবন। সাথে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা। গত ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের ৫২ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্বের সব থেকে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফাতে আলোকসজ্জা করা হয় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা দিয়ে, সাথে বাজানো হয় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুর।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফা, ভবনটি বাংলাদেশের ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে লাল সবুজ রঙে আলোকিত করা হয়।
দুবাইয়ে অবস্থিত এই ভবনটি রবিবার বাংলাদেশের পতাকার রূপ নেয়। স্থানীয় সময় রাত ১১ টায় এক ফেসবুক ভিডিও বার্তাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানায় বুর্জ খলিফা। শুভেচ্ছার পাশাপাশি বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধিও কামনা করে সংস্থাটি।
দুই হাজার ৭১৬ ফুট উচ্চতার এই ভবনটি, এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতীয় দিবস ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে আলোকসজ্জার মাধ্যমে উপস্থাপন করে। এই আলোকসজ্জার মাধ্যমে তারা মূলত সেই দেশ বা বিষয়ের সাথে একাত্মতা পোষণ করে।
জাতীয় দিবস ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়াও কখনো কখনো বিভিন্ন দেশের বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি উদ্যোগে এমন আয়োজন করে থাকে।
এখন প্রশ্ন আসে, এমন আলোকসজ্জা কি বিনামূল্যে করে এতো বড় ভবনে? উত্তর হলো, না। এমন আলোকসজ্জার জন্য আগে থেকে একটি বিশাল অংকের টাকা দিয়ে দিতে হয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে।
১৬৩ তলা এই ভবনে একটি বিজ্ঞাপন বা বার্তা দেওয়ার জন্য খরচ হয় আমিরাতি দিরহাম আড়াই লক্ষ দিরহাম থেকে প্রায় ১ মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম পর্যন্ত, যা বাংলাদেশী হিসেবে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় তিন কোটি টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এই খরচের হিসাব নির্ধারণ করে Burj Khalifa By Emaar। তারা সময় এবং দিনের হিসাব করে এই টাকা নিয়ে থাকে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এক পরিমাণ অর্থ এবং ছুটির দিন বাদে, সপ্তাহের অন্য দিন ভিন্ন পরিমাণ অর্থ নেয়।
আর সময়ের হিসাবে এক থেকে তিন মিনিটের কোনো বিজ্ঞাপন বা বার্তা প্রদর্শনের জন্য, এর সম পরিমাণ অর্থ নেয় তারা।
ছুটির দিন বাদে, এক থেকে তিন মিনিটের ভিডিও বার্তার জন্য আমিরাতি দিরহাম আড়াই লক্ষ দিরহাম নিয়ে থাকে। যা বাংলাদেশী টাকাতে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।
কিন্তু সপ্তাহের ছুটির দিনে এই অংক বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে তিন লক্ষ আমিরাতি দিরহাম, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি টাকা ।
আবার বিশেষ উপলক্ষ্যে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ৮টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে দুই থেকে তিন মিনিটের জন্য ব্যয় করতে হয় প্রায় ৫ লক্ষ দিরহাম থেকে ১ মিলিয়ন দিরহাম।
পুরো প্রদর্শনগুলো পরিচালনা করে দুবাই-ভিত্তিক মার্কেটিং এজেন্সী ‘মুলেন লো মেনা’ এবং কমপক্ষে লাইভ হওয়ার চার সপ্তাহ আগে অর্থ সহ সকল কিছু জমা দিতে হয় তাদের কাছে।
তারা আবার এটির মালিক ‘ইমার প্রপার্টিজ’ দ্বারা অনুমোদন করিয়ে নেয়।
এই ভিডিও প্রচারের সময়, ডিসপ্লেতে মিউজিক যোগ করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে আলাদা কোনো অর্থ প্রদান করতে হয় না।
যেহেতু এবারের বাংলাদেশের ৫২ তম স্বাধীনতা দিবস সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পড়েনি, সেহেতু এই প্রদর্শনীর জন্য আড়াই লক্ষ আমিরাতি দিরহামের মতো খরচ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০১৯ সালে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা প্রথম ভেসে উঠে বিশ্বের সবথেকে উঁচু ভবনে। এরপর থেকে প্রায় প্রতি বছর ই বাংলাদেশের বিশেষ বিশেষ দিনে এভাবে বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আসছে পৃথিবীর সব থেকে উঁচু এই ভবন।