অন্যান্য

বুর্জ খলিফাকে পেছনে ফেলবে কুয়েতের বুর্জ মোবারক

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩
বুর্জ খলিফাকে পেছনে ফেলবে কুয়েতের বুর্জ মোবারক
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে উচুঁ ভবন বুর্জ খলিফাকে পেছনে ফেলতে নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে কুয়েত। বুর্জ মোবারক নামের এই ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে, উচ্চতার দিক থেকে এটিই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে উচুঁ ভবন।আর এর মাধ্যমে অচিরেই সবচেয়ে উচুঁ ভবনের গৌরব হারাতে চলেছে বুর্জ খলিফা। 

অ্যারাবিয়ান বিজনেস এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, আরব্য রূপকথা আলিফ লায়লা বা এক হাজার এক আরব্য রজনীর সঙ্গে মিল রেখে ১ হাজার ১ মিটার উচ্চতার বুর্জ মোবারক আল কবির নির্মাণের কাজ হাতে নিয়েছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। এটি হবে কুয়েতের মাদিনাত আল হারির বা সিল্ক সিটির প্রধান আকর্ষণ। চলতি বছরের মধ্যে এ সিটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ সিটির প্রাণকেন্দ্রেই বুর্জ মোবারক নির্মাণ করা হবে।ইতিহাস তৈরী করতে যাওয়া এ টাওয়ারটি স্প্যানিশ স্থপতি সান্তিয়াগো ক্যালাত্রাভা দ্বারা ডিজাইন করা হবে। এক কিলোমিটার উচ্চতার এই স্থাপনার পুরো নির্মাণকাজ শেষ হতে সময় লাগবে ২৫ বছর। টাওয়ারের নকশাটি একটি ঐতিহ্যবাহী ইসলামিক মিনারের আদলে হবে। এটি একটি সরু আকৃতি যা ওপরের দিকে টেপার। এতে থাকবে ২৩৪টি ফ্লোর। 

এছাড়াও, এতে একসঙ্গে অবস্থান করতে পারবেন সাত হাজারের বেশি মানুষ। পুরো সিল্ক সিটি প্রকল্পে ৪ লাখ ৩০ হাজার কর্মসংস্থান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মালিক কর্তৃপক্ষ।প্রকল্পটিতে প্রচুর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। যা কুয়েতের অর্থনীতিতে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখবে। 

এ ভবনটিকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হবে উপশহর। যেখানে থাকবে হোটেল, বাসস্থান, অফিস এবং বিনোদনের মাধ্যম। পাশাপাশি একটি বৃহৎ কেন্দ্রীয় উদ্যান অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ভবনটি তৈরি করতে খরচ হবে ২৫ বিলিয়ন কুয়েতি দিনার। 

বুর্জ মোবারকের নির্মাণ কাজে ডাবল বা ট্রিপল ডেকার এলিভেটর ব্যবহার করা হবে। তীব্র বাতাসের মধ্যেও যেন ভবনটি টিকে থাকতে পারে, সে পরিকল্পনা নিয়েই তৈরি করা হচ্ছে এক কিলোমিটার উচ্চতার এ স্থাপনা।ভবন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইন্টারলকিং ও বাঁকানো কাঠামোর মাধ্যমে স্থাপনাটি তৈরি করা হবে। এর ফলে ১৫০ কিলোমিটার গতির বাতাসেও ভবনটির কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না।অনুমান করা হচ্ছে, এই ভবন নির্মিত হলে শহরে বিনিয়োগের পরিমাণ কয়েক বিলিয়ন বাড়বে  এবং  এটি জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।  

এটি স্থানীয়দের জন্য ৪ লক্ষ ৩০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরী করবে। সরকারী এবং বেসরকারী খাতের মধ্যে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বের মাধ্যমে প্রকল্পটি নির্মাণ করা হচ্ছে, যা কুয়েতের স্থাপত্যের ইতিহাসে অনন্য নিদর্শন হতে চলেছে। 

রিয়েল এস্টেট কোম্পানি তামদীন গ্রুপের মতে, মদিনাত আল হারিরের শহরের কেন্দ্রে  চারটি আলাদা কোয়ার্টার থাকবে। ফিনান্স সিটি, লেজার সিটি, ইকোলজিক্যাল সিটি এবং রেসিডেন্সিয়াল সিটি। যেখানে শিক্ষাগত এবং সাংস্কৃতিক সুযোগ সুবিধাগুলির উপর বিশেষ ফোকাস করা হয়েছে।এদিকে, ২০১১ সালে প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে মাদিনাত আল হারের নামক শহরটির নির্মাণ কাজ শুরু করে কুয়েত। এ বছর শহরটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এটির নির্মাণ শেষ হলে ৪ লাখ ৩০ হাজার নতুন চাকরি সৃষ্টি হবে। অপরদিকে, স্থানীয় ও বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে পারবেন। ধারণা করা হচ্ছে, এখানে দ্রুত সময়ের মধ্যে শত শত সুউচ্চ ভবন নির্মাণ হবে এবং সব মিলিয়ে শহরটিতে ৭ লাখ মানুষ বসবাস করতে পারবেন।