বিশ্বস্থ ও পুরনো এক কর্মচারীকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্রাসাদসম বাড়ি উপহার দিলেন এশিয়ার শীর্ষ ধনকুবের মুকেশ আম্বানি। ভাগ্যবান ওই কর্মীর নাম মনোজ মোদী।কর্মচারীকে এই উপহার প্রদানের ফলে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, রিলায়েন্স চেয়ারম্যানের শুধু ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সই বড় নয়, মনও অনেক বড় ।সূত্রের খবর, মাস খানেক আগেই সম্পন্ন হয়েছে মালিক কর্মচারীর এই দানপর্ব।
মুকেশ আম্বানির কাছ থেকে দামি বাড়ি উপহার পাওয়া মনোজ মোদী রিলায়েন্স, জিও এবং রিটেলের পরিচালক। ভারতের ধনীতম শিল্পপতির ডান হাত বলা হয় তাকে। তিনি মুকেশের দীর্ঘদিনের সঙ্গী। তার চেয়ে বড় কথা, অনেকের ধারণা, গত কয়েক দশকে রিলায়েন্স গ্রুপের আকাশ ছোঁয়া সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে মনোজের ধারালো বুদ্ধি।
শোনা যায়, রিলায়েন্সের বহু বিলিয়ন ডলারের সফল চুক্তির পিছনে রয়েছেন মনোজ মোদী। তিনি কখনই লাইমলাইটে আসেন না, তবে মুকেশ আম্বানির এক নম্বর ভরসার লোক তিনি।
আসলে, মনোজ মোদী হলেন মুকেশ আম্বানির ব্যাচমেট। মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে দুইজনে একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন।
গত শতাব্দীর আটের দশকের গোড়ার দিকে রিলায়েন্সে যোগ দিয়েছিলেন মনোজ। সেই সময় রিলায়েন্স গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন মুকেশ আম্বানির বাবা ধীরুভাই আম্বানি।
মুকেশ ও তাঁর স্ত্রী নীতা আম্বানির কয়েক দশকের পুরোনো এই বন্ধুটি এখন তাঁদের সন্তান আকাশ আম্বানি এবং ইশা অম্বানির সঙ্গেও তাল মিলিয়ে কাজ করে চলেছেন। জিও থেকে শুরু করে রিলায়েন্স রিটেলের কাজকর্ম দেখছেন।
মাঝে দুই বছরের কোভিড মহামারীকালে ফেসবুকের সঙ্গে জিও’র প্রায় ৪৩ হাজার কোটি রুপির একটি চুক্তি হয়। যে সময়ে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সংস্থা বিনিয়োগ পেতেই নাকানি-চুবানি খাচ্ছিল, সেই সময়ই অভাবনীয় অঙ্কের বিদেশি বিনিয়োগ আনে রিলায়েন্স, জিও।
এর পেছনেও অন্যতম হাত ছিল মনোজ মোদীর।
বর্তমানে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করতে করতে আম্বানি গ্রুপের অংশে পরিণত হয়েছেন মনোজ মোদী। তাঁর বিশ্বস্ততা ও পরিশ্রমে মুগ্ধ মুকেশ আম্বানি। রিলায়েন্সের সাফল্যের পিছনে তাঁর ভূমিকা অটপটে স্বীকার করে নেয় আম্বানি পরিবার।
তবে রিলায়েন্সে তার কিন্তু কোনো তথাকথিত হেভিওয়েট পদ নেই। অথচ তারই নখদর্পণে থাকে সংস্থার সবকিছু। রিলায়েন্সের সাফল্যের পেছনে মুকেশ আম্বানিকে সাহায্য করার বিষয়ে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, কর্মী মনোজের কাজে খুশি হয়ে তাকে একটি ২২ তলা বিলাসবহুল প্রাসাদ উপহার দিয়েছেন মুকেশ। তাও আবার নেপিয়ান সি রোডের মতো মুম্বাই শহরের অন্যতম দামি এলাকায়।
যেখানে থাকেন জেএসডব্লিউ গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর সজ্জন জিন্দাল। এই এলাকায় আবাসিক সম্পত্তির দাম সাধারণত বর্গফুট প্রতি ৪৫,১০০ টাকা থেকে ৭০,৬০০ টাকা।
জানা গেছে, উপহার হিসেবে পাওয়া ওই বহুতল প্রাসাদটির নাম ‘বৃন্দাবন’।
নেপিয়ান সি রোডেই আবাসন সম্পত্তির দাম সাধারণত ৪৫,১০০ থেকে ৭০,৬০০ টাকা প্রতি বর্গফুট করে হয়। প্রতিটি ফ্লোর ৮,০০০ বর্গফুট জুড়ে বিস্তৃত। অর্থাৎ এক একটি তলাই মধ্যবিত্তের ৮টি ফ্ল্যাটের সমান। ভবনটির মোট ফ্লোর ১.৭ লক্ষ বর্গফুটের।
একাধিক সংবাদ মাধ্যমের দাবি, ২২ তলা প্রাসাদের প্রথম আট তলা পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত। শুধু বাড়ি দিয়েই ক্ষান্ত হননি মুকেশ, বহুমূল্যের ইতালিয়ান ফার্নিচারে সাজিয়ে দিয়েছেন গোটা প্রাসাদ।
তবে রিলায়েন্স, জিও এবং রিটেলের পরিচালক মনোজ মোদীর আগে থেকেই দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে বাণিজ্য নগরীর মহালক্ষ্মী এলাকায়। যার মোট মূল্য ৪১৫ কোটি রুপি। এবার সঙ্গে যোগ হল মুকেশের দেওয়া দেড় হাজার কোটির সম্পত্তি।