অন্যান্য

সাকিব, মাশরাফি ও মুশফিকের মাঝে শিক্ষাগত যোগ্যতায় কে এগিয়ে আছেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৩
সাকিব, মাশরাফি ও মুশফিকের মাঝে শিক্ষাগত যোগ্যতায় কে এগিয়ে আছেন?
বাংলার ক্রিকেটের তিন উজ্জ্বল নাম সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম এবং মাশরাফি বিন মুর্তজা। মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর পাশাপাশি, শিক্ষাজীবনেও সফলতার ছাপ রেখেছেন তারা।

সাকিব আল হাসান গ্র‍্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন, American International University of Bangladesh থেকে। অপরদিকে, বাকি দুইজনের সাথে জড়িয়ে আছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম।

চিত্রা পাড়ের কৌশিক থেকে ক্রিকেট মাঠের মাশরাফি, সব জায়গাতেই দুর্দান্ত ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিক। শিক্ষাজীবনেও ছিলেন তুখোড় মেধাবী। 

তবে বই খাতার চেয়ে মাঠই বেশি টানতো তাকে। স্কুল পালিয়ে খেলতে যাওয়া ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। কখনো আবার সুযোগ পেলে বন্ধুদের নিয়ে চলে যেতেন সিনেমা হলে।

জন্ম জেলা নড়াইলেই কেটেছে, ম্যাশের শিক্ষাজীবনের প্রায় পুরোটা অংশ। নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে এসএসসি পাস করেন তিনি।

পরবর্তীতে উচ্চমাধ্যমিক লেভেল ভর্তি হোন নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজে। এখান থেকে ২০০৩ সালে, HSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোন মাশরাফি বিন মর্তুজা। 

এরপর দর্শন শাস্ত্রে অনার্স কোর্সে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। দর্শন বিভাগের ৩১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। কিন্তু ক্রিকেটের ব্যস্ততার কারণে তার একাডেমিক পড়াশুনা শেষ করা হয়নি।


বাংলার অভদ্র ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিত সাকিব আল হাসান। অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদী হয়ে উঠেন তিনি। আম্পারের সাথে বিতর্কে জড়ান,  ভেঙে ফেলেন স্ট্যাম্প, হুট করেই ঢুকে যান মাঠের ভেতরে। 

তবে, এখন খেলার মাঠে সাকিব স্ট্যাম্প ভাঙলেও, একসময় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ব্যাট ভেঙে ফেলতেন বাবা মাশরুর রেজা। কারন ছিল পড়াশোনা বাদ দিয়ে খেলতে যাওয়া।

মেধাবী হলেও লেখাপড়া ভালো লাগতোনা সাকিব আল হাসানের। স্কুল বাদ দিয়ে ব্যাট বল হাতে ছুটে বেড়াতেন, এক মাঠ থেকে আরেক মাঠে। অথচ বাবা চাইতেন ছেলেকে ফুটবলার বানাবেন।

প্রাথমিক পর্যায়ে বেশ কয়েকবার স্কুল পাল্টেছেন বাংলাদেশের সেরা তারকা।  মাগুরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ার সময় সুযোগ পেয়ে যান বিকেএসপিতে।

সেখান থেকেই শেষ করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনা। পরবর্তীতে ইংরেজিতে BA ডিগ্রি লাভ করেছেন, American International University of Bangladesh থেকে। 


ক্রিকেটের মতোই পড়াশোনা নিয়েও ব্যাপক সিরিয়াস ছিলেন মুশফিকুর রহিম। এ কারনেই হয়তো, বাংলাদেশের সবচেয়ে শিক্ষিত ক্রিকেটারের খ্যাতি অর্জন করতে পেরেছেন তিনি।

মিস্টার ডিপেন্ডেবলের প্রাথমিক শিক্ষাজীবন কেটেছে বগুড়া জেলা স্কুলে। সেই সময়টাতে পড়াশোনার চেয়ে, খেলাধুলা নিয়েই বেশি মেতে থাকতেন তিনি। সুযোগ পেলেই স্কুল পালিয়ে চলে যেতেন খেলার মাঠে।

এরপর বাংলাদেশ ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পেয়ে ভর্তি হোন সপ্তম শ্রেনিতে। এখান থেকেই মানবিক বিভাগ নিয়ে, সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের পড়াশোনা। 

HSC তে জিপিএ-৫ পেয়ে মুশফিক চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে এডিমশন নেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। ৩৬ তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন তিনি।

খেলোয়াড়দের জন্য আলাদা কোটা থাকলেও, সেই সুবিধা গ্রহন করেননি মিস্টার ডিপেন্ডেবল।
বরং নিজ যোগ্যতায় সরাসরি সেখানে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন।

তবে ইউনিভার্সিটি লাইফে খুব বেশি ক্লাস করতে হয়নি তাকে। বন্ধু ও শিক্ষকদের সহায়তায়, ক্রিকেটের পাশাপাশি এগিয়ে নিয়েছেন শিক্ষাজীবন। 

কৃতিত্বের সাথে স্নাতক শেষ করার পর, একই বিভাগ থেকে সম্পন্ন করেন স্নাতকোত্তর। উভয় পর্যায়েই প্রথম বিভাগ পেয়েছেন পরিশ্রমী এই ক্রিকেটার। 

নিজেকে এখানেই থামিয়ে রাখেননি মেধাবী মুশফিক। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করার পর যেমন ডাবল সেঞ্চুরির দিকে পা বাড়ান, তেমনি মাস্টার্সের পর করছেন এম.ফিল। 

তাঁর গবেষণার বিষয় উপমহাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস। এম.ফিলকে মুশফিক রূপ দিতে চান পিএইচডিতে। সফলভাবে গবেষণা শেষ করাই এখন তাঁর লক্ষ্য।