আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট একই দিনে আয়োজন করার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী রোববারের ইসি বৈঠকে নেওয়া হতে পারে। একই বৈঠকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখও নির্ধারিত হতে পারে।
ইসি সূত্র জানায়, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর ভোটের দিনের মধ্যে প্রায় দুই মাস সময় রাখা হবে। সে হিসেবে আগামী বছরের ৫ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।
সাধারণত সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ করা হয়। কিন্তু এবার একজন ভোটারকে একইসঙ্গে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ব্যালটে ভোট দিতে হবে। এতে সময় বেশি লাগতে পারে বলে ইসি মনে করছে।
শুক্রবার রাজধানীর একটি কেন্দ্রে মক ভোটিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি যাচাই করে ইসি। মক ভোটে দেখা গেছে, অনেক ভোটার গণভোটের ব্যালট পড়ে ভোট দিচ্ছেন, এতে প্রতিজন ভোটারের সময় বেশি লাগছে, এক ভোটকক্ষে দুটি গোপন কক্ষ স্থাপন করলে কেন্দ্র বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
তবে সব ভোটকেন্দ্রে গোপন কক্ষ বাড়ানোর মতো অবকাঠামো নেই। গ্রামাঞ্চলে নতুন ভোটকেন্দ্র বাড়ানোও চ্যালেঞ্জ—এই পরিস্থিতিতে সময় বাড়ানোই সবচেয়ে বাস্তবসম্মত বিকল্প হিসেবে দেখছে ইসি।
ফেব্রুয়ারিতে দিনের আলো কম থাকে এবং সকালঘন কুয়াশা সকালের ভোট গ্রহণকে ধীর করে দিতে পারে। এ পরিস্থিতিতে ইসি তিনটি বিকল্প বিবেচনা করছে— সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা—সকাল খুব ঠান্ডা হওয়ায় সম্ভাবনা কম, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা—সন্ধ্যার অন্ধকারে নিরাপত্তা ঝুঁকি, সকাল ৭টা ৩০ থেকে বিকেল ৪টা ৩০—এটাই সবচেয়ে কার্যকর বিকল্প হিসেবে আলোচনায় রয়েছে
আগামী নির্বাচনের জন্য ইসি ৪২,৭৬১টি ভোটকেন্দ্র ও ২,৪৪,৬৪৯টি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করেছে। প্রথমে শুধু সংসদ নির্বাচন ধরে প্রস্তুতি নেওয়া হলেও এখন একইদিনে গণভোট হওয়ায় সময় ও কাঠামো নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করার পরিকল্পনা আছে। ভোট গ্রহণের সময় বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। রোববারের বৈঠকে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।