জাতীয়

বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দিল স্বাধীন কমিশন

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫
বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দিল স্বাধীন কমিশন
বিডিআর সদর দপ্তরে ২০০৯ সালের হত্যাকাণ্ড ও বিদ্রোহের ঘটনাটি তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন। এসময় কমিশনের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদন গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতি দীর্ঘদিন ধরে অনিশ্চয়তায় ছিল। আপনাদের অনুসন্ধান সেই অন্ধকার দূর করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
কমিশন প্রধান জানান, ১৬ বছর পেরিয়ে যাওয়ায় তদন্তের অনেক আলামত নষ্ট হয়ে গেছে এবং সংশ্লিষ্ট অনেকে বিদেশে অবস্থান করায় তদন্ত ছিল চ্যালেঞ্জিং। তিনি বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণে আমরা সর্বোচ্চ সময় দিয়েছি—কেউ চাইলে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজের বক্তব্য রাখতে পেরেছেন। আগের তদন্ত প্রতিবেদনসহ সকল সম্ভাব্য উপাত্ত সংগ্রহ করে কাজ করেছি।
মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার কমিশনের অনুসন্ধান তুলে ধরে বলেন, কমিশনের মূল্যায়নে ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল এবং রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত কিছু ব্যক্তির ভূমিকা তাদের নজরে এসেছে। তাঁর ভাষায়, কমিশনের অনুসন্ধানে তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপসকে ‘মূল সমন্বয়কারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে—যদিও এই দাবির স্বাধীন যাচাই এখনো হয়নি।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় পর্যায়ের কিছু রাজনৈতিক নেতাকর্মী ঘটনার সময় পিলখানায় প্রবেশ করেছে বলে সাক্ষ্যে পাওয়া গেছে। তিনি দাবি করেন, কমিশন যে সাক্ষ্য সংগ্রহ করেছে তাতে তৎকালীন সরকারপ্রধানের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতার বিষয়টি উল্লেখযোগ্যভাবে উঠে এসেছে।
এ ছাড়া ঘটনার সময় কিছু গণমাধ্যম ও সাংবাদিকের অপেশাদার আচরণের কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বলে কমিশনের সদস্যরা জানান।
প্রতিবেদনে জবাবদিহি, ব্যারাক ব্যবস্থাপনা, প্রশিক্ষণ এবং বাহিনীর কমান্ড কাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের সুপারিশ করেছে কমিশন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলো আরও সক্ষম হয় এবং নিহতদের পরিবার ন্যায়বিচার পেতে পারে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও সংহতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ এবং স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি।