ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ২৩ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে রিকশা, ভ্যান ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে তারা সাত দফা দাবী উপস্থাপন করেন, যা তাদের পেশাগত জীবনের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তারা দাবি করেন।
নীতিমালা অনুযায়ী ইজিবাইক, রিকশা এবং ব্যাটারিচালিত ভ্যানের জন্য নিবন্ধন এবং চালকদের লাইসেন্স ও রুট পারমিট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
কারিগরি ত্রুটি সংশোধন করে ব্যাটারিচালিত যানবাহনগুলোর আধুনিকায়ন করার দাবী জানানো হয়েছে, যাতে যানবাহনগুলো আরও নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব হয়।
ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত ও আহত ব্যাটারিচালিত যানবাহন শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিদ্যুৎ চুরি ও অপচয় বন্ধে সরকারিভাবে নির্ধারিত স্থানগুলোতে চার্জিং স্টেশন স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে।
সব শ্রমিকদের জন্য আর্মি রেটে রেশন সরবরাহ, পেনশন সুবিধা, এবং বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি তোলা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ করার নির্দেশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিষদ প্রতিবাদ জানায় এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়।
সব শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানানো হয়েছে।
গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট ঢাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেয়। আদালত কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে রুল জারি করে, যেখানে বলা হয়, এই নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না। এই নির্দেশের পরপরই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা আন্দোলন শুরু করে।
সংগ্রাম পরিষদ এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের দাবী মানা না হলে ৩০ নভেম্বর সারা দেশে সংহতি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের দাবী অনুযায়ী, সরকার ও কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে উদাসীনতা তাদের জীবিকা হুমকির মুখে ফেলেছে।
রিকশা, ভ্যান এবং ইজিবাইক চালকরা বাংলাদেশের গ্রামীণ ও নগর পরিবহন ব্যবস্থার একটি বড় অংশ। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা তাদের জীবনযাত্রায় চরম প্রভাব ফেলবে। তাই এই সমস্যার সমাধান করতে হলে সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের এই আন্দোলন তাদের জীবিকার জন্য একটি ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা। তবে এই দাবি মেনে নেওয়ার পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়েও সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।