প্রেমের টানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে তরুণ-তরুণীর বাংলাদেশে ছুটে আসার খবর পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশে পা দিলেন এক মালয়েশিয়ান তরুণী।
২০ বছর বয়সী এই তরুণীর নাম নূর আয়েশা। তিনি মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। পাশাপাশি চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
যার কারনে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আয়েশার ছুটে আসা, সেই বাংলাদেশি তরুণটির নাম ওমর ফারুক। তার বাড়ি চাঁদপুরে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ধর্মীয় রীতি মেনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন এই জুটি। এভাবেই তারা তাদের ভালোবাসার মানুষকে আপন করে নেন।
ওমর ফারুকের বাবা চাঁদপুরের বড় শাহতলীর মৃত কামাল চৌধুরী। ফারুক আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে জীবিকার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যান।
সে এবং আয়েশা একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করলেও তাদের পরিচয় হয় মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বদৌলতে।
মেসেঞ্জারের মাধ্যমে নম্বর আদান-প্রদান করেন তারা। সেই থেকে বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব থেকে প্রণয়। ফারুক তার পরিবারের কাছে আয়েশার কথা বলেন। তারাও পছন্দ করেন আয়েশাকে।
প্রায় চার মাস আগে দেশে ফিরে আসেন ফারুক। প্রেমিকের সাথে দেখা করতে ব্যাকুল আশেয়া ছুটে আসেন বাংলাদেশে। সিদ্ধান্ত নেয় বিয়ে করার।
সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। সাথে ছিলেন বড় ভাই, ভাবি ও মা।
ফারুক বর্তমানে চাঁদপুরের হাজিগঞ্জে থাকেন। সেখানকার মকিমাবাদের ৬ নং ওয়ার্ডের একটি ভাড়া বাসায় উপস্থিত হোন আয়েশা ও তার পরিবার। গত বৃহস্পতিবার সেই বাসাতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন দুজন।
দুই পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং ফারুকের কাছের কিছু বন্ধুর উপস্থিতিতে একে অপরকে আপন করে নেন তারা। বিয়েতে অত্যন্ত আনন্দিত ফারুকের পরিবার। বিদেশী বউ পেয়ে তারা বেশ উৎফুল্ল।
বাংলাদেশী যুবকের মালয়েশিয়ান মেয়ে বিয়ে করার খবর শুনে দূর-দূরান্ত থেকে নব দম্পতি কে শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে আসেন মানুষজন। বিদেশী বউ এবং তার পরিবারের সাথে পরিচয় হয় তাদের। বেশ প্রশংসা করেন তারা।
এদিকে আয়েশার পরিবারও বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও আতিথেয়তায় মুগ্ধ। আয়েশা মা এদেশের ফুচকার বেশ প্রশংসা করেন।
তিনি মালয়েশিয়ায় গিয়ে ফুচকার ব্যবসা করবেন বলে পরিকল্পনা করছেন। এখানকার এমিগ্রেশন পুলিশের আন্তরিক ব্যবহারে তিনি মুগ্ধ।
ছেলের বউ সম্পর্কে ফারুকের মার মনোভাব ইতিবাচক। জানা যায়, আয়েশা ইংরেজি বেশ দক্ষ। পাশাপাশি বাংলা শেখার চেষ্টা করছে সে।
সত্যিকারের ভালোবাসা সকল বাঁধাকে তুচ্ছ করে। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আয়শা-ফারুক দম্পতি। কিছুদিন দেশে থেকে সস্ত্রীক মালয়েশিয়ায় ফিরে যাবেন ফারুক। সেখানে গিয়ে ক্যারিয়ার গড়ার পরিকল্পনা আছে তাদের।
২০২২ সালের জুলাই অবধি মোট দশজন এমন ভিনদেশী প্রেমিক-প্রেমিকা নিজ দেশ ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন বাংলাদেশে। তাদের মধ্যে ৩ জন তরুণ ও ৭ জন তরুণী।
আবার প্রবাসী বাংলাদেশীরা যে যার কর্মস্থলে সেই দেশের তরুণ এবং তরুণীদের বিয়ে করে সুখেই সংসার করছেন।
তবে সবগুলো প্রেম এবং বিয়ের পরিণতি সুখকর হয়নি। মানিয়ে নিতে না পেরে কেউ কেউ ফিরে গেছে নিজ দেশে। আবার বাংলাদেশী অনেক যুবক-যুবতীর প্রতারিত হওয়ার খবরও পাওয়া যায় মাঝে মাঝে।