১০ ও ২০ টাকার নতুন নোট বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় এই নোট ইস্যু করা হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য শাখায়ও নতুন নোট পাওয়া যাবে।
নোটগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার কর্তৃক স্বাক্ষরিত। দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো তাঁর স্বাক্ষরিত নোট বাজারে এসেছে।
নতুন গর্ভনর হিসেবে জনাব আব্দুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব গ্রহণ করেন গত ১২ জুলাই। তিনি দেশের দ্বাদশতম গর্ভনর।
এর আগে তিনি সরকারের অর্থসচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ১১ জুন
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তাঁকে চার বছরের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের "ডিপার্টমেন্ট অফ কমিউনিকেশন এন্ড পাবলিকেশন" এর পরিচালক জনাব সাঈদা খানম এই তথ্যটি জানান।
নোটগুলোর রং,আকার,নকশা এবং নিরাপত্তা জনিত ফিচারগুলো একই রয়েছে। নতুন এই নোটের পাশাপাশি বর্তমানে বাজারে থাকা ১০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের অন্যান্য নোটও বৈধ হিসেবে চালু থাকবে।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নতুন দশ টাকার নোট বাজারে ছাড়া হয়। সেগুলো ছিল সাবেক গর্ভনর ফজলে কবির কর্তৃক স্বাক্ষরিত।
বাজারে বিদ্যমান নোটে যেমন অসমতল ছাপ বা ইন্টাগ্লিও ছিল নতুন নোটে তা পরিবর্তন করে সমতল ছাপ দেয়া হয়।
গ্রাহক চাহিদার কথা বিবেচনা করেই এপ্রিল মাসে দশ টাকার নতুন নোট ছাড়া হয়েছিল।
সেই নোটে সম্মুখদিকের উপরের বামে লেখা '১০' এবং লালচে রঙে লেখা "বাংলাদেশ ব্যাংক" পরিবর্তন করে সাদা রঙে লেখা হয়। গভর্নরের স্বাক্ষর লাল-খয়েরি রঙে মুদ্রিত হয়। আগে তা কালো রঙে মুদ্রিত ছিল।
এছাড়া নিরাপত্তাজনিত ফিচার অফসেট প্রিন্টিং, মাইক্রোটেক্সট, জলছাপ,নিরাপত্তা সুতা আগের মতোই আছে। বিশ টাকার নোটের ক্ষেত্রে সব আগের মতোই রাখা হয়েছিল।
উভয় নোটের ক্ষেত্রে আসল কিনা তা চেনার বৈশিষ্ট্য একই। আলোর বিপরীতে ধরলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিচ্ছবি, বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো এবং ইংরেজিতে নোটের মূল্যমান দেখা যাবে। অবশ্যই নোটের জলছাপ স্পষ্ট বোঝা যাবে।
নতুন কোন নোট বাজারে আনার দায়িত্বে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ব্যবস্থাপনা বিভাগ বা কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট।
তাদের বিভাগের দায়িত্ব হলো ডিজাইন বাছাই, ছাপানো এবং বাজারে আনা। নকশা তৈরীর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব একদল ডিজাইনার থাকে।
যখনই নতুন নোট বাজারে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তখন সেই কমিটির কাছ থেকে কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট সম্ভাব্য কিছু নকশা সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠায়।
পরে গর্ভনরের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর তা টাকশালে যায় এবং নোট ছাপা হয়ে বাজারে আসে।
তবে বাজারে আসার আগে নোটের বৈশিষ্ট্য,কী কী পরিবর্তন হয়েছে এবং নোটটি জাল কি না তা চেনার উপায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে সর্বসাধারনকে জানানো হয়।
বর্তমানে এক, দুই, পাঁচ, দশ, বিশ, পঞ্চাশ, একশ, দুশো, পাঁচশ এবং সর্বোচ্চ এক হাজার টাকার নোট বাজারে প্রচলিত।
তবে এক টাকার নোট আজকাল আর ছাপা হয় না। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে একে বাতিল বলে ঘোষণাও করা হয়নি।