রাজনীতি

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ‘মব’ তৈরি করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ‘মব’ তৈরি করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অনিয়ন্ত্রিত অপব্যবহার এখন শুধু বাংলাদেশেই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী একটি বড় সংকটে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর দাবি, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি ও মব তৈরি করার অপচেষ্টা চলছে, যা গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল ২০২৫-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো দায়বদ্ধতা নেই। এখানে যা খুশি তাই বলা হয়। রাজনৈতিক দল, ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী—সবার বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। একজন মানুষকে হেয়প্রতিপন্ন করতে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এতে গণতান্ত্রিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক সময় এমনভাবে অপপ্রচার চালানো হয়, যেন একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে মব তৈরির চেষ্টা চলছে। এর মাধ্যমে সমাজে নৈরাজ্য ছড়ানো হচ্ছে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা সবাই অপেক্ষা করছি এমন এক নির্বাচনের জন্য, যার মাধ্যমে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফেরা সম্ভব হবে। তবে গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে হলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। ভিন্নমত মানেই শত্রু—এ মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভিন্নমতের মানুষদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে, যা কোনোভাবেই সুস্থ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

বিএনপি একটি পরীক্ষিত রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং বন্ধ থাকা পত্রিকাগুলো পুনরায় চালু করেন। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা শক্তিশালী করতে কাজ করেছেন।

তিনি জানান, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচিতে গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি স্পষ্টভাবে রাখা হয়েছে। এটা কথার কথা নয়—এটা আমাদের পরীক্ষিত কমিটমেন্ট,—বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আরও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করলে সমস্যার সমাধান হয় না। গত ১৫ বছরে পরিকল্পিতভাবে গণমাধ্যমকে দুর্বল করা হয়েছে। সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হলে কর্মপরিবেশ, চাকরির নিরাপত্তা—সব বিষয়ের উন্নয়ন সম্ভব।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন। সঞ্চালনা করেন মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী। আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা প্রমুখ।