বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের কিছু রাজনৈতিক দল সচেতনভাবে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে আমরা চেষ্টা করছি যাতে সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, কিছু দল চায় নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, সঠিক সময়ে না হয় এটা ঠিক হচ্ছে না।
তিনি বলেন, এখন দেশের জন্য দ্রুত একটি রাজনৈতিক সরকার দরকার। অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা সবকিছু এখন নির্ভর করছে একটি নির্বাচিত সরকারের ওপর। ফখরুল জানান, জাতীয় সংস্কার কমিশন অল্প সময়ের মধ্যে কিছু সংস্কারের কাজ শেষ করেছে, যা পরিবর্তনের পর প্রয়োজনীয় ছিল। তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২২ সালে যে ৩১ দফা দিয়েছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এই সংস্কারগুলো করেছি। ২০১৬ সালে ম্যাডাম খালেদা জিয়া দিয়েছিলেন ভিশন-২০৩০, আর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন ১৯ দফা কর্মসূচি সবকিছু মিলিয়ে বিএনপির জন্মই সংস্কারের মধ্য দিয়ে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ফ্রিডম অফ প্রেস, জনগণের মৌলিক অধিকার—এসবই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান। বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থা থেকে সংসদীয় শাসনে রূপান্তর এনেছিলেন, মেয়েদের বিনামূল্যে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন। অথচ বিএনপিকে এখন ‘ভিলেন’ বানানোর চেষ্টা চলছে। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলি, বাংলাদেশে যা কিছু ভালো হয়েছে সব বিএনপির হাত ধরেই হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ প্রেসিডেন্ট জিয়ার নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু ইতিহাস তাকে ধারণ করেছে। কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ট্রোর উক্তি উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, কনডেম মি, ইট ডাজেন্ট মেটার—হিস্ট্রি উইল এবজোর্ভ। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছে, কেউ তাঁকে মুছে ফেলতে পারবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান সেই ধারারই নেতা, যিনি গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও স্বাধীনতার পতাকা তুলে ধরেছেন। আমরা তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব, অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিকীকরণ করব।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও প্রকাশনা উপকমিটির আহ্বায়ক আবদুস সালাম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি নেতা আবদুল হাই শিকদার, মওদুদ আলমগীর পাভেল, মাহদী আমিন, রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ, এবং মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।