জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর বেতন কত? কি কি সুবিধা পান তিনি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
প্রধানমন্ত্রীর বেতন কত? কি কি সুবিধা পান তিনি?

অন্যান্য সরকারি চাকুরিজীবির মতোই, মাস শেষে বেতন পেয়ে থাকেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও তিনি পান এমন অনেক সুবিধা,  যা একজন ধনী ব্যবসায়ীর পক্ষে অর্থ দিয়েও কেনা সম্ভব না। 

মাসিক বেতন, যাতায়াত খরচ, বাসা ভাড়া, ডেইলি এলাউন্স, ইনসুরেন্স সুবিধা, কূটনৈতিক পাসপোর্ট, দাপ্তরিক ও টেলিফোন ব্যয়, চিকিৎসা সেবা সহ, আরো অনেক সুবিধা পেয়ে থাকেন সরকার প্রধান।

একজন প্রধানমন্ত্রীর কাজ হলো সঠিকভাবে দেশকে পরিচালনা করা। তবে বিনামূল্যে এই কাজ করেন না তিনি। এর জন্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতি মাসে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা বেতন পান। 
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর, বরাদ্দ পান একটি সরকারি বাসভবন। যা আমাদের কাছে গনভবন নামে পরিচিত। এটি সাজানো এবং রক্ষনাবেক্ষনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল খরচ বহন করে সরকার।

বাসস্থানের সৌন্দর্য্য ফুটিয়ে তুলতে যত অর্থই খরচ হোক না কেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত ফান্ড থেকে এর পেছনে এক টাকাও খরচ করতে হয় না।
তবে গনভবনে থাকার জন্য কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কেউ চাইলে নিজের বাড়ি অথবা অন্য কোথাও বাসা ভাড়া নিয়েও থাকতে পারবে। 
সেক্ষেত্রে মাসে বাড়ি ভাড়া হিসেবে একটি বড় অংকের অর্থ পাবেন তিনি। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর হাউস রেন্ট এলাউন্সের পরিমান প্রতিমাসে এক লক্ষ টাকা! 
অর্থাৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি এই মুহুর্তে গনভবন ছেড়ে দিয়ে নিজস্ব বাসায় উঠেন, তাহলে সেই বাড়ির ভাড়া বাবদ, মাস শেষে লাখ টাকা পাবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর নিজের বাড়ি হলেও সেটি সাজিয়ে দেয়া হবে সরকারি অর্থায়নে। প্রয়োজন অনুযায়ী সংযুক্ত করা হবে বিলাসবহুল ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা। 
গনভবন ছাড়া অন্য কোথাও বাস করলে, বছর শেষে মেইন্টেন্যান্সের জন্য পাবেন আলাদা অর্থ। 
যার পরিমান ৩ মাসে প্রাপ্ত বাসা ভাড়ার সমান, অর্থাৎ ৩ লাখ টাকা।
নিজস্ব বাড়ি বা গনভবন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেখানেই বসবাস করুক না কেন, সব জায়গায় সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবে সরকার। 
বিদ্যুৎ, গ্যাস, টেলিফোন ও পানির বিল সহ, সমপর্যায়ের সুবিধার জন্য যত খরচ প্রয়োজন হোক না কেন, প্রধানমন্ত্রীকে এসব নিয়ে কোন চিন্তাই করতে হবে না। সবকিছুই ব্যয় হবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে।
এমনকি তার নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হবে রাষ্ট্রীয়ভাবে। গনভবনের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার কথা আমরা সবাই জানি। রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে, সারাবছর জুড়েই এখানে নিয়োজিত থাকে স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা।
তবে কোন প্রধানমন্ত্রী যদি নিজের বাড়িতে থাকেন, সেখানকার পরিবেশ নিরাপদ রাখার দায়িত্বও সরকারের। এর জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে গড়ে তোলা হবে অস্থায়ী গার্ড সিস্টেম।
সরকারি কাজে একজন প্রধানমন্ত্রীকে, দেশ ও দেশের বাইরে নিয়মিত ভ্রমন করতে হয়। এর পিছনে খরচ হওয়া সম্পূর্ন অর্থ বহন করে রাষ্ট্র।
দেশের অভ্যন্তরে ট্রেনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে, তার জন্য বরাদ্দ থাকে বিলাসবহুল রেলওয়ে স্যালুন কোচ। সাথে পরিবারের কোন সদস্য থাকলে, তারাও ফ্রিতে যাতায়াত করতে পারেন। 
এছাড়াও ব্যক্তিগত সহকারীর পাশাপাশি, পেয়ে থাকেন বিনামূল্যে লাগেজ পরিবহনের সুবিধা। আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ চারজন পার্সোনাল এটেন্ডেন্স রাখতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। 
আকাশপথে ভ্রমনের ক্ষেত্রেও সকল খরচ বহন করে রাষ্ট্র। কমার্সিয়াল ফ্লাইটে যাওয়ার সময়, তার সাথে পরিবারের একজন সদস্য ফ্রিতে ভ্রমনের সুযোগ পাবেন।
তবে ভাড়া করা এয়ারক্রাফট হলে, বিমানে যতগুলো সিট আছে, পরিবারের ততজন সদস্য কোন টাকা ছাড়া,  দেশের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারবেন।
সড়কপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা পেয়ে থাকেন বাংলাদেশের প্রধানন্ত্রী ও তার পরিবার। চাহিদা অনুযায়ী, রাষ্ট্রের কাছ থেকে যে কোন ধরনের বাহন চাইতে পারেন তিনি।
কোন অফিসিয়াল কাজে দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে, আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে রাষ্ট্র। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর জন্য কোন ভিসার প্রয়োজন হবে না। 
কারন তার জন্য বরাদ্দ থাকে একটি লাল রঙের কূটনৈতিক পাসপোর্ট। এটি থাকলে বিদেশ ভ্রমণের জন্য কোনো ভিসা লাগে না। সংশ্লিষ্ট দেশে অবতরণের পর, অন-অ্যারাইভাল ভিসা পেয়ে যান।
আকাশপথে ভ্রমনের সময় রাষ্ট্রীয়ভাবে, বাৎসরিক ২৫ লক্ষ টাকার ইন্সুরেন্স কাভারেজ পান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও ভ্রমনে থাকা অবস্থায়, প্রতিদিন ৩ হাজার টাকা পান তিনি।
দেশের সাধারণ নাগরিকের মতোই একজন প্রধানমন্ত্রীও যে কোন সময় অসুস্থ হতে পারেন। তবে চিকিৎসার পিছনে আমাদেরকে অর্থ ব্যয় করতে হলেও, সরকার প্রধান বিনামূল্যে সেটি পেয়ে যান।
বাংলাদেশের যে কোন হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা ফ্রি চিকিৎসা নিতে পারেন। এর জন্য কোন অর্থ ব্যয় করতে হয় না তাদেরকে। বাসভবনে বসেও, একই ধরনের সুবিধা নিতে পারেন তারা।
শুধু তাই নয়, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য, সরকারি খরচে বিদেশেও পাড়ি দিতে পারেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা।