বলিউডের 'মিস্টার পারফেকশনিস্ট' আমির খানের ব্যক্তিগত জীবন বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রে। প্রথম স্ত্রী রীনা দত্তের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং তারপর পরিচালক কিরণ রাওয়ের সঙ্গে ১৫ বছরের সংসারের ইতি টেনে তৃতীয়বারের মতো বিয়ের গুঞ্জন শুরু হয়েছে আমিরকে ঘিরে। কিন্তু এই গুঞ্জনের মাঝেই তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, তার বয়স এখন ৫৯, এবং এ অবস্থায় নতুন করে বিয়ে করার পরিকল্পনা তার আর নেই।
২০০৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর আমির খান ও কিরণ রাও গাঁটছড়া বাঁধেন। ২০১১ সালে তারা সারোগেসির মাধ্যমে পুত্র আজাদ রাও খানকে স্বাগত জানান। কিন্তু ২০২১ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা আসে, যা ভক্তদের বেশ অবাক করেছিল। বিবাহবিচ্ছেদের পরও আমির ও কিরণ ছেলেকে কো-প্যারেন্টিং করছেন। অভিনেত্রী কারিনা কাপুরের শো হোয়াট উইমেন ওয়ান্ট-এ কিরণ জানান, আমিরের সঙ্গে আজাদের সম্পর্ক এখন অনেক মসৃণ।
কিরণ বলেন, আমির সবসময়ই ব্যস্ত থাকেন এবং দাম্পত্য জীবনে অভিভাবকত্বের বেশিরভাগ দায়িত্ব তিনি একাই পালন করতেন। তবে ডিভোর্সের পর আমির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বুঝতে পারেন যে, দূরে থাকার কারণে তাকে সন্তানকে সময় দিতে বিশেষভাবে সচেতন হতে হবে। তাদের সম্পর্কের এই নতুন বাস্তবতায় আমির নিজেকে অনেক বেশি জড়িত রেখেছেন বলে জানান কিরণ।
আজাদ এখন কিছুটা বড় হওয়ায় বাবার সঙ্গে সময় কাটানো উপভোগ করছে। কিরণ মজার ছলে উল্লেখ করেন, এখন তিনি নিজের জন্য একটু সময় বের করতে পারছেন। যদিও আমির আজাদের স্কুল সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে জড়াতে চান না। এটি নিয়ে কিরণের মন্তব্য, “অধিকাংশ বাবারই এ সমস্যা থাকে; তারা সবসময় বলে, আমাকে স্কুলের কাজে জড়াবেন না, আমি অন্য দায়িত্ব নেব।”
তবে এত কিছুর পরও, বলিউডে গুঞ্জন উঠেছে আমিরের তৃতীয় বিয়ের কথা। কিছুদিন আগেই রিয়া চক্রবর্তীর পডকাস্টে উপস্থিত হয়ে এই প্রসঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন আমির। তিনি জানান, “আমার বয়স এখন ৫৯। আর কবে বিয়ে করব... এই বয়সে মনে হয় সেটা বেশ মুশকিলের।”
আসলে এই বয়সে তার নতুন করে সংসার পাতার কোনো ইচ্ছা নেই। বরং সাবেক স্ত্রীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোই তাকে বেশি তৃপ্তি দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “আমার পছন্দের মানুষের সঙ্গে থাকতেই ভালো লাগে, দারুণ আছি। এখন ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি।”
একাধিক বিয়ে এবং দাম্পত্য জীবনের উত্থান-পতনের পর আমির এখন অনেকটাই নিজের জন্য সময় কাটাচ্ছেন। কাজের ব্যস্ততার পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কগুলোও বজায় রাখতে চান তিনি। নিজের ব্যক্তিগত উন্নতি এবং ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা তার জীবনকে নতুন মানে দিয়েছে বলে মনে করেন আমির।
আপাতত বিয়ে বা নতুন সম্পর্কের চেয়ে তার অগ্রাধিকার ভালো বাবা ও ভালো মানুষ হয়ে ওঠায়।