বিনোদন

এবার আসামি শমী কায়সার

উপ-সম্পাদক

উপ-সম্পাদক

বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৪
এবার আসামি শমী কায়সার
আলোচিত অভিনেত্রী শমী কায়সার আবারও বিতর্কের মুখে। এবার তার বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা মানহানির মামলা করেছেন। মাগুরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা এই মামলায় শমী কায়সারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। এ জন্য বাদী ১০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
মামলার পেছনের কারণ
জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছাত্র ও জনতার আন্দোলন দানা বাঁধে, যেখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে বিক্ষোভে অংশ নেয়। আওয়ামী সরকারের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নেওয়ার কারণে শমী কায়সারের নাম উঠে আসে। বিশেষত, তিনি ছাত্রদের আন্দোলনের বিরোধিতা করে বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যা জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এরই ধারাবাহিকতায় তার বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী দলের সমর্থকরা অভিযোগ এনে এই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিবরণ
মামলার বাদী জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা, যিনি শমী কায়সারের বক্তব্যকে সরাসরি অপমানজনক এবং মানহানিকর হিসেবে দেখছেন। মামলার আইনজীবী কাজী মিনহাজ উদ্দিন এ বিষয়ে বলেছেন, "শমী কায়সার বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করেছেন। এর ফলে জাতির একটি বড় অংশ তাকে নিয়ে ক্ষুব্ধ। আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছে এবং তদন্তের দায়িত্ব ঝিনাইদহের পিবিআইকে দিয়েছে।"
শমী কায়সারের অবস্থান
শমী কায়সার ৫ আগস্টের পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তার বক্তব্য এবং অবস্থান ছিল আওয়ামী লীগের পক্ষে। বিশেষত, তিনি যখন ছাত্র আন্দোলনের সমালোচনা করেন, তখন থেকেই তিনি রাজনৈতিক মহলে আরও আলোচিত হন। এ ধরনের মন্তব্যের কারণে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। অনেকে মনে করেন, তার বক্তব্য সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখার একটি প্রচেষ্টা ছিল।
আদালতের সিদ্ধান্ত
আদালত এই মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং শমী কায়সারকে ভবিষ্যতে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। ঝিনাইদহের পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তদন্তের, যাতে পুরো ঘটনাটি সঠিকভাবে পর্যালোচনা করা যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মামলা কেবল শমী কায়সারের ওপর নয়, পুরো সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ওপর একটি রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
শিল্পী এবং রাজনীতি
শমী কায়সার শুধু একজন অভিনেত্রীই নন, বরং তিনি বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও অংশগ্রহণ করে আসছেন। তবে গত কিছু বছর ধরে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলছেন, যা তার বিরুদ্ধে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে। তার এই রাজনৈতিক অবস্থান তাকে ক্রমাগত সমালোচনার মুখে ফেলেছে। অনেক শিল্পীই রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করেন, কিন্তু শমী কায়সারের বক্তব্য এবং তার সময়োপযোগী আচরণ তাকে আরও বিতর্কিত করে তুলেছে। বিশেষ করে ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করে তার অবস্থান তার বিরুদ্ধে জনমনে প্রতিকূলতার সৃষ্টি করেছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
শমী কায়সারের বিরুদ্ধে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা এই বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকেই মনে করেন, রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করা একজন নাগরিকের অধিকার, কিন্তু শমী কায়সারের ক্ষেত্রে তার বক্তব্য অনেকের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আবার অনেকেই বলছেন, এটি তাকে দমিয়ে রাখার একটি প্রচেষ্টা হতে পারে।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শমী কায়সারের ভবিষ্যৎ অবস্থান কী হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে তার আত্মগোপনের পর থেকে তিনি কোনো প্রকাশ্য বিবৃতি দেননি। মামলার রায় বা তদন্তের ফলাফল কী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।