ক্যাম্পাস

'তোমাকে আমার ভালো লেগেছে' বলেই ছাত্রীকে ঢাবি শিক্ষকের যৌন নিপীড়ন!

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩
'তোমাকে আমার ভালো লেগেছে' বলেই ছাত্রীকে ঢাবি শিক্ষকের যৌন নিপীড়ন!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। এই ইনস্টিটিউটেরই এক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম নুরুল ইসলাম। তিনি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর ওই অভিযোগপত্র দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরে উপাচার্য অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্ত করবেন বলে ভুক্তভোগীকে জানান।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষার্থী। গত ১১ সেপ্টেম্বর হল বিষয়ে পরামর্শ নেয়ার জন্য ইনস্টিটিউটের অফিস কক্ষের সামনে গেলে তিনি আমাকে নিজ থেকে তার কক্ষে ডাকেন। তখন আমি স্যারের কক্ষে যাই। স্যার আমাকে প্রয়োজনীয় দু’একটা কথা বলার পরপরই অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে শুরু করেন। তিনি আমাকে নানারকমের সাহায্যের প্রলোভন দেখান এবং আমাকে বলতে থাকেন আমি যেন একা তার সঙ্গে দেখা করি এবং তার কাছে গিয়ে বই নেই। তাছাড়া তার বিষয়ে বা তার সাহায্যের বিষয়ে যেন কাউকে কোনো কথা না বলি।

তাতে আরও বলা হয়, একপর্যায়ে তিনি আমার ফোন নম্বর নেন এবং এক রকম জোর করেই আমার মেসেঞ্জারে নক করেন এবং যুক্ত হোন। তার কথার ধরন এবং অঙ্গভঙ্গি আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হলে তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়াই এবং তখন তিনি নিজেও তার নিজ আসন ছেড়ে আমার কাছে উঠে আসেন এবং আমাকে যৌন নিপীড়ন করেন। তিনি বার বার বলতে থাকেন, তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। তিনি আমার শরীরের আপত্তিকর স্থানে স্পর্শ করেন। ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু বুঝে উঠতে না পেরে আমি ভয়ে তার কক্ষ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই।

অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনার সময় আমাকে তার রুমে থেকে এবং বের হয়ে যাওয়ার সময় সিনিয়র কিছু শিক্ষার্থী দেখেছেন। এরপর আমি এতটাই ভয় পাই যে, মেসে ফিরে যাওয়ার শক্তিও পাচ্ছিলাম না, তাই আমি ক্যান্টিনে কিছু সময় অবস্থান করি। কিছু সময় পর আমাকে পুনরায় ফোন করে তার সঙ্গে দুপুরের খাবার অথবা হালকা নাশতা বা চা খাওয়ার প্রস্তাব জানান। তখনও আমাকে বারবার এই বিষয়ে যেন কাউকে না জানাই, তা সাবধান করতে থাকেন। আমি মানসিক ট্রমা থেকে বের হতে না পেরে প্রচণ্ড ভয়ে গ্রামের বাসায় চলে যাই। যার কারণে আমি আমার চলমান পাঠদান থেকে বিরত থাকি। এমন সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ আসে তার বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালের মে মাসেও নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনে আরেক নারী শিক্ষার্থী।