ক্যাম্পাস

বিইউপিতে বন্ধুত্ব ও বর্ষার মিতালীতে হয়ে গেলো বর্ষাবরণ

Bukhariuzzaman Shainik

Bukhariuzzaman Shainik

মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩
বিইউপিতে বন্ধুত্ব ও বর্ষার মিতালীতে হয়ে গেলো বর্ষাবরণ
প্রকৃতি রক্ষার ব্রত নিয়ে আসা বর্ষাঋতুকে বরণ করে নেয়া ও বন্ধুত্বকে আহ্বানের উদ্দেশ্যে প্রতি বছরের মতো এবারো বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাস এ পালিত হলো বর্ষা উৎসব ‘বর্ষা মিতালী ১৪৩০’। 

গত ১৯ এবং ২০ জুলাই বিইউপি লিটারেচার অ্যান্ড ড্রামা ক্লাবের আয়োজনে “ফোঁটায় ফোঁটায় নীলাম্বর নীলে,বন্ধুত্বের বন্ধনে বর্ষা এসেছে ফিরে" এই ট্যাগলাইনকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয়েছে বহুবিধ প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।


আয়োজকেরা বলছেন, "বর্ষা মানে শুধু আবেগ নয়! বর্ষা মানে বন্ধুত্বের সূচনা! বর্ষা মানে একজনের মনের সাথে আরেকজনের মনের মিল। তাই এইবার শুধু বর্ষা কেই আহ্বান করা হয় নি বর্ষার সাথে সাথে বন্ধুত্বকে ও বরণ করা হয়েছে! বর্ষা মিতালির মধ্য দিয়ে একজন আরেকজনকে বর্ষা প্রেমী হিসেবে চিহ্নিত করেছে! বর্ষা প্রেমীদের মনের সংযোগ ঘটেছে! বর্ষাকে এবার শুধু বরণই করা হয় নি বন্ধুত্বকেও নব রূপে বরণ করা হয়েছে।

"বর্ষা মিতালী ১৪৩০" উপলক্ষে বর্ণিল সাজে আল্পনার সাথে সেজে উঠেছিলো বিইউপি ক্যাম্পাস। লোয়ার প্লাজা থেকে শুরু করে কনকোর্স, আপার প্লাজা, মনপুরা লেক, থার্ডপ্লেস সবজায়গায় লেগেছিলো সাজসজ্জার ছোঁয়া। আর ভিন্ন ভিন্ন স্পটে বসেছিলো বাহারি সব ফটোবুথ। 

উৎসবের দিন বৃষ্টি না এলেও আকাশে দাপিয়ে বেড়িয়েছে সুয্যি মামা। ছিলো প্রচন্ড গরম। তবুও দমানো যায় নি উৎসব প্রিয় বিইউপির শিক্ষার্থীদের। নেচে গেয়ে, আনন্দ আর আবেগভরা ভালোবাসা নিয়ে বরণ করে নিয়েছেন বর্ষাকে।

আর চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছে এই বর্ষা উৎসব ছিলো শেষ বর্ষা, তাই তাঁদের মধ্যে আবেগটাও ছিলো বেশি। অন্যদিকে সদ্য ক্যাম্পাসে পা দেওয়া প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছে বর্ষা পালন যেন ছিলো এক নতুন ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। নতুনরা আসবে আর পুরাতনরা বিদায় নিবেন, এটাই তো নিয়ম। তবে নতুন ও পুরাতনদের এক করে এ আলাদা বন্ধুত্ব ও আবেগ নিয়েই এক ছাতার নিচে মহাআনন্দ ও উৎসব মূখর পরিবেশে এবার পালিত হলো বর্ষা উৎসব। 


শুধুমাত্র বর্তমান শিক্ষার্থীরাই নয়, বরং সাবেকরাও উপস্থিত হয়েছিলেন এ উৎসবে। তাঁদেরই একজন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের রাইয়ান নাফিজা। তিনি বলেন, লেখাপড়া শেষ করার পর অনেকদিন হয়েছে ক্যাম্পাসে আসা হয় নি। বিইউপির মাটি, পরিবেশ ও বন্ধুদের খুব মিস করছিলাম। আর আমার কাছে এই ক্লাব অন্যরকম এক আবেগের জায়গা, কারণ এক সময় আমিও  এ ক্লাবের হয়েই কাজ করতাম। ছোটরা পুরো ক্যাম্পাস খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে, পুরো ব্যপারটা দেখতে আর স্মৃতি রোমন্থন করতেই এসেছি, খুব ভালো লাগছে। 


উৎসবের প্রথম দিন ১৯ জুলাই প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে ছিল গল্প লেখা প্রতিযোগিতা , নির্ধারিত কবিতা-আবৃত্তি, স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং চিত্রগল্প। উল্লিখিত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দেশীয় ঐতিহ্য ধারণ করার পাশাপাশি নিজেদের সৃজনশীল মনন এর বিকাশ ঘটানোর সুযোগ লাভ করে।

উৎসবের সমাপনী দিন ২০ জুলাই আয়োজিত হয় নাচ,গান, কবিতা -আবৃত্তি, মঞ্চনাটকসহ বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী ওক্লাব সদস্যরা পারর্ফম করেন। সবশেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সম্মানিত অতিথিরা। 


আয়োজিত প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীরা হলেন - স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি- মায়িশাহ ফাহমিদা, সাদিয়া ইসলাম তন্ময়; কবিতা আবৃত্তি- মোঃ আল-আমিন, মায়েশা ফাহমিদা; চিত্রকল্প - ইসরাত জাহান, তরিকুল ইসলাম; অঙ্কন প্রতিযোগিতা- মাহিয়া মুমতাহানা, মাইশা শেহরিন সুখী; গল্প লেখা - মাসুমা ইবতেখার নাবিলা,শেখ রিফাত; দেয়াল চিত্র-  ইমতিয়াজ আহমেদ, ফিরুজ ইয়াজদানী শুকরিয়া, নুসরাত নওমি।

বর্ষা বন্দনাই শুধু এবারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল না! এবার বন্ধুত্ব কে ও আহ্বান করেছে এই ধরায় বিইউপিএলডিসি!! বর্ষা মানে শুধু কয়েক ফোঁটা পানি নয়! ওই বর্ষণের সাথে জড়িয়ে থাকা প্রতিটি মুহুর্ত! বন্ধুর সাথে বৃষ্টি উপভোগ করার বিশেষ মুহুর্ত! তাই তো নীল সাদা পাঞ্জাবি আর শাড়ী পড়ে বন্ধুরা আয়োজন করেছে "বর্ষা মিতালী ১৪৩০"।