বাংলাদেশের উন্নয়ন

বদলে যাচ্ছে মাদানী এভিনিউ ১০০ ফিট

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২
বদলে যাচ্ছে মাদানী এভিনিউ ১০০ ফিট

ঢাকা শহরের পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ উন্নত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদী পযন্ত ৬ লেন সড়কের কাজ এগিয়ে চলছে।

এই সড়কের ফলে অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক এবং ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে খুব সহজেই যাতায়াত করা যাবে।

মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদ পযন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ এবং বালু নদী থেকে শীতলক্ষ্যা নদী সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে পাস হয় ২০১৮ সালে। 

প্রকল্পের আওতায়  ৩ দশমিক ৭৯ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া ৪ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার বিদ্যমান সড়ককে ৬ লেনে উন্নীত করা হচ্ছে।

ঢাকার পাশেই গড়ে উঠেছে পরিকল্পিত ও আধুনিক পূর্বাচল উপশহর। আর এই শহরের সাথে সড়ক যোগাযোগ সহজ করতে সাত কিলোমিটারের মাদানী এভিনিউ গড়ে তোলে রাজউক। যা অনেকের কাছে ১০০ ফিট সড়ক নামেও পরিচিত।

পূর্বাচলে তিনশ ফিট এক্সপ্রেসওয়ে ছাড়া আধুনিক শহরটির সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার অংশ হিসেবে বর্তমানে চলছে এই প্রকল্পটি।  

মাদানী এভিনিউ থেকে বালু নদী পর্যন্ত সড়ক প্রসস্থ করার জন্য জমি অধিগ্রহণ করে মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে সড়কটি প্রশস্ত করার কাজ।

চারটি সেতু প্রশস্ত করা হচ্ছে এই প্রকল্পে। এ সেতুগুলো আগে ২২ ফুট ছিল এখন তা ৮ ফুট বাড়িয়ে ৩০ ফুট করা হচ্ছে। 

এই পথের সেতু আর কালভার্ট তৈরির কাজও এগিয়ে চলছে বেশ দ্রুততার সাথে। এরই মধ্যে ছয়লেনের সড়কটি দৃশ্যমান হয়েছে। আর আগের যে সড়কটি ছিল তার মধ্যেই এই পথের যানবাহগুলো চলাচল করছে। 

ঢাকার বাড্ডার সাতারকুল আর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জকে আলাদা করেছে বালু নদী। প্রকল্পের আওতায় এই নদীতে নির্মিত হচ্ছে সেতু।

দৃষ্টিনন্দন তিন লেন করে ৬ লেনের পাশাপাশি দু’টি সেতু নির্মানাধীন রয়েছে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৪৬৮ মিটার। ইতোমধ্যে পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে এটি। 

এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় ৯০ মিটার ব্রিজ প্রশস্তকরণ, ২১০ মিটার চারটি সেতু প্রশস্তকরণ, ২০০ মিটারের নতুন দুইটি সেতু নির্মাণ করা হবে।

২ হাজার ৩৮৪ মিটারের চারটি আণ্ডারপাস নির্মাণসহ ৯০০ মিটারের একটি ইউলুপ, ৫০ মিটারের ওভারব্রিজ নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে পূর্বাচলের ভেতর দিয়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করা হচ্ছে মাদানি এভিনিউ। 

এর একটি গিয়ে মিলবে পূর্বাচলের তিনশ ফিট এক্সপ্রেসওয়ের সাথে। আরেকটি যাবে নারায়নঞ্জ রুপগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত গাজী সেতুর সাথে। 

দৃষ্টিনন্দন ঢাকার পূর্বাঞ্চল বিশেষভাবে নারায়ণগঞ্জের সাথে যোগাযোগকে আরও সহজ করেছে এই সেতু। মাদানী এভিনিউ হয়ে সড়কটি এই সেতুর সাথে মিশে গেলে যোগাযোগ খাত আরও সমৃদ্ধ হবে। 

প্রকল্প বাস্তবায়নে এক হাজার ২৫৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা খরচ ধরা হয়। চলতি বছরের মধ্যেই প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যৌথভাবে এটি বাস্তবায়ন করছে।

এরআগে ২০১৩ সালে রাজধানীর বারিধারা এলাকার প্রগতি সরণির সামনের অংশ থেকে বালু নদী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৭১ কিলোমিটার ইন্টারসেকশন সড়ক নির্মিত হয়।

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকা, নারায়গঞ্জ, চট্রগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা ও নোয়াখালি অঞ্চলের সাথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। খুব সহজেই এই পথ দিয়ে যাতায়ত করা যাবে। 

পূর্বাঞ্চলের দ্রুত শিল্পায়নে সহযোগিতা করবে এই সড়ক ব্যবস্থা। সেইসাথে সংযোগ সড়ক অঞ্চলটির আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাবে।

আন্তঃজেলার বাণিজ্য সুবিধা বাড়ার পাশপাশি এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। ফলে দেশের অগ্রযাত্রায় বড় অবদান রাখবে সড়ক পথটি।