ট্যুরিজম

কক্সবাজার বা সিলেটে ঘুরতে গিয়ে যে যে উপায়ে প্রতারিত হতে পারেন!

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩
কক্সবাজার বা সিলেটে ঘুরতে গিয়ে যে যে উপায়ে প্রতারিত হতে পারেন!
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত শুধু বাংলাদেশীদেরই নয়, বিদেশী পর্যটকদের কাছেও দারুণ জনপ্রিয়। অথচ, বিশ্বখ্যাত এ সৈকতেই পর্যটকদের শিকার হতে হয় নানান ধরণের প্রতারণার। আর এ তালিকায় সবার ওপরে আসে বিচ ফটোগ্রাফারদের নাম। কক্সবাজারের সাগরপাড়ে DSLR ক্যামেরা গলায় দেখা মেলে নাম-না-জানা অনেক ফটোগ্রাফারের। সাগরে বেড়াতে এলে কে না চায় উন্নতমানের ক্যামেরাতে সুন্দর মুহূর্তগুলোর স্মৃতি ধরে রাখতে! 

কিন্তু সবার তো আর অমন উন্নত ক্যামেরা নেই। আর এ ক্যামেরাবিহীন পর্যটকেরাই সে ফটোগ্রাফারদের মূল টার্গেট হয়ে বসেন। প্রথমে তারা বাহারি বুলিতে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে থাকেন। ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা দরে মাত্র কয়েকটি ভালো রেজ্যুলেশনের ছবি তুলে দেবার কথা বলেন।

পর্যটকদের কেউ হয়তো মোট ৫০টি ছবি চান, আবার কেউ হয়তো চান ১০০টি। আর প্রথমে এ চাহিদা অনুযায়ীই ছবি তুলতে রাজি হয়ে যান ফটোগ্রাফাররা। তবে যে-ই না শুরু হয় ছবি তুলবার পালা, তখনই তারা তাদের আসল খেলা দেখান। ১০০ নয়, বরং একনাগাড়ে তারা ৫-৬ শ' ছবি তোলেন। পরে যখন পর্যটকেরা ছবির বিল পরিশোধ করতে যান, তখনই তারা অবাক বিস্ময়ে দেখেন, যা ভেবেছিলেন, বিল এসেছে তার থেকে প্রায় কয়েক হাজার বেশি!

অভিনব এ প্রতারণা নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করতে চাইলেও তেমন কোনো লাভ হয়না। কেননা সৈকতে এ ফটোগ্রাফাররা কাজ করে একটি সিন্ডিকেট গড়ার মাধ্যমে। এমন পরিস্থিতিতে পর্যটকদের একমাত্র আস্থার জায়গা জেলা প্রশাসনের তথ্য-অভিযোগ কেন্দ্র। সেখানে কর্মরত ব্যক্তিদের কাছে বললে, অনেক সময় এ প্রতারণার হাত থেকে বাঁচা সম্ভব হয়। 

শুধু কক্সবাজারই নয়, সিলেট, বান্দরবান সহ দেশের অন্যান্য পর্যটন স্পটেও রয়েছে এমন ফটোগ্রাফারদের দৌরাত্ম্য। তাই একান্ত বাধ্য না হলে, ঘুরতে গিয়ে ফটোগ্রাফারদের এ ফাঁদে না পড়ে নিজের মুঠোফোনেই ভ্রমণের স্মৃতিগুলো আগলে রাখা উচিত।

সিলেট অঞ্চলের স্পটগুলোতে আবার নৌকার বেশ কদর। রাতারগুল বা সাদাপাথরের মতো স্পটগুলোতে নৌকা ছাড়া যাওয়া প্রায় অসম্ভব বলা যায়। আর সেখানেই মাঝিরা বসে থাকেন আরেকটি ফাঁদ পেতে। মূল স্পটে যেতে নৌপথে যে দূরত্ব পেরোতে হয়, তা অতিক্রম করতে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিটের মতো লাগে। অথচ, এ অল্পক্ষণের পথ পেরোতেই অনেকে হাজার-পনেরশ' টাকা নৌকো ভাড়া চেয়ে বসেন। 

সেখানেও সেই সিন্ডিকেট; সব মাঝিরাই তাই একই মূল্য হাঁকেন। পর্যটকেরা তখন বাধ্য হয়েই অমন বেশি মূল্যের নৌকোয় চড়ে বসেন। এ বিষয়ে পর্যটকদের সহায়ক হতে পারে ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা। সিলেট অঞ্চলে ঘুরতে গিয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের পরামর্শ মোতাবেক চললে বেশ ঝামেলাহীনভাবেই সম্পূর্ণ ভ্রমণটি শেষ করা সম্ভব।এছাড়াও আরো অনেক বিপত্তিতেই পড়তে হয় পর্যটকদের। কক্সবাজার হোক আর সিলেট হোক, সব জায়গাতেই আপনারা অনেক বাহারি পণ্যের মেলা বসতে দেখেছেন।  

আর এ মেলার এক বৃহৎ অংশ জুড়েই থাকে বিস্কিট, চকোলেট, আচারসহ বিভিন্নরকম খাবার। সাবান থেকে শুরু করে মেয়েদের নানান কসমেটিক্সেরও দেখা মেলে। তুলনামূলক কম মূল্য চেয়ে পর্যটকদের আকর্ষণ করে, এসব পণ্য তাদের কাছে গছিয়ে দিতে চান বিক্রেতারা। তবে, শঙ্কার বিষয় এই, ট্যুরিস্ট স্পটের এসকল দেশি-বিদেশি পণ্যের অধিকাংশই থাকে মেয়াদোত্তীর্ণ। 

এমনকি অনেক নকল পণ্যও দেদারসে কেনা-বেচা চলে সেখানে। তাই, স্বল্পমূল্যে পেলেও আদতে সে খাবারগুলো খাওয়ার বা কসমেটিক্সগুলো ব্যবহার-উপযোগী থাকে না। তাই পুরো অর্থটাই যেন একরকম জলেই ঢালা হয়। এসব কারণে ঘুরতে গিয়ে পারতপক্ষে ওসব বাহারি জিনিস ক্রয় করা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।