তথ্যপ্রযুক্তি

এক আইফোনের দাম দুই কোটি টাকা, কী আছে এতে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩
এক আইফোনের দাম দুই কোটি টাকা, কী আছে এতে?
একটি আইফোনের দাম দুই কোটি টাকা! অবিশ্বাস্য হলেও সম্প্রতি এমন দামেই একটি আইফোন বিক্রি হয়েছে। রেকর্ড দামের এই আইফোন লেটেস্ট কোন মডেলের নয়। বরং এটি ছিলো পুরনো মডেলের অব্যবহৃত একটি ফোন। 

২০০৭ সালে বাজারে আসা সেই মডেলের একটি অব্যবহৃত আইফোন নিলামে তুলেছিলো এক প্রতিষ্ঠান। সেখানে ফোনটির দাম উঠেছে ১ লাখ ৯০ হাজার ৩৭২ মার্কিন ডলার।  বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২ কোটি সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা।  

প্রায় ১৬ বছরের পুরনো সেই ফোনের মেমরি ছিলো মাত্র চার গিগাবাইট। তৎকালীন সময়ে এটির দাম ছিলো মাত্র ৬০০ ডলার। সম্প্রতি পুরনো সেই ফোন নিলামে তুলে যুক্তরাষ্ট্রের এলসিজি অকশন'স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। 

তাদের প্রত্যাশা ছিলো, ফোনটির দাম সর্বোচ্চ এক লাখ ডলার হতে পারে। তবে সবাইকে অবাক করে ফোনটি বিক্রি হয় প্রত্যাশার চেয়েও দ্বিগুণ দামে। আইফোনের ইতিহাসে এটি ছিলো একদম প্রথম দিকের মডেল। ২০০৭ সালের ৯ জানুয়ারি 'ম্যাক ওয়ার্ল্ড' সম্মেলনে, প্রথম প্রজন্মের আইফোন প্রদর্শন করা হয়। এর ছয় মাস পরেই আইফোন বাজারে আনে অ্যাপল।

কিন্তু দুই মাস পরেই, চার গিগাবাইট মেমোরির সেই ফোন বাজার থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়। ঐতিহাসিক সেই মডেলের একটি  আইফোন অব্যবহৃত অবস্থায় সংগ্রহ করা হয়েছিলো। যা বিক্রি হয়েছে দুই কোটি সাত লক্ষ টাকায়। সাধারণত বাজারে আইফোনের লেটেস্ট মডেলের ফোন পাওয়া যায় এক থেকে দুই লক্ষ টাকায়। তবে কাস্টোমাইজড কিছু আইফোন বিক্রি হয় কোটি টাকা দামে। যেগুলোতে বসানো থাকে সোনা রুপা থেকে শুরু করে রোলেক্স ওয়াচ পর্যন্ত।  

'ক্যাভিয়ারের' ডিজাইন করা এমনই এক আইফোন “ডেটোনা।”। যেটিতে বসানো আছে আটটি ডায়মন্ড এবং চারটি সোনার প্রলেপ যুক্ত, রোলেক্স ঘড়ির ডায়াল। বিলাসবহুল এই আইফোনের দাম, প্রায় দেড় কোটি টাকার বেশি। লিমিটেড সংস্করণ হিসাবে তৈরি এ ফোনটির পেছনে বসানো হয়েছে, সোনার প্রলেপ দিয়ে তৈরি, 'রোলেক্স কসমোগ্রাফ ডেটোনা' মডেলের ঘড়ির ডায়াল। সাধারণ 'রোলেক্স কসমোগ্রাফ ডেটোনা' মডেলের ঘড়িই বিক্রি হয় ২০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকায়। অপরদিকে আইফোনের পিছনে বসানো, ঘড়িটির ডায়াল সাজানো হয়েছে, আটটি মূল্যবান ডায়মন্ডের মাধ্যমে। 


এছাড়াও এটির পাশে রয়েছে ছোট আকারের আরো তিনটি স্বর্ণের প্রলেপ যুক্ত ঘড়ির ডায়াল। সব মিলিয়ে বিলাসবহুল এই ফোন পরিণত হয়েছে বিশ্বের অন্যতম দামি আইফোনে। যদিও এগুলোর কোনটিই বিশ্বের সবচেয়ে দামি আইফোন নয়। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দামি আইফোন ডিজাইন করেছে আমেরিকার প্রতিষ্ঠান ফ্যালকন। তাদের তৈরি 'ফ্যালকন সুপারনোভা আইফোন-সিক্স পিংক ডায়মন্ড' বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফোনের স্বীকৃতি পেয়েছে। বিলাসবহুল এই আইফোন খাটি স্বর্ণ এবং প্লাটিনাম দ্বারা মোড়ানো। এটির পিছনে বসানো রয়েছে অত্যন্ত মূল্যবান পিংক ডায়মন্ড।

সব মিলিয়ে ফোনটির দাম রাখা হয়েছে ৪৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকার কাছাকাছি।শুধুমাত্র এই ফোনটির দাম বিশ্বের দরিদ্র কিছু দেশের বার্ষিক জিডিপি থেকেও বেশি। ২০২০ সালে  প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র টুভালুর জিডিপির আকার ছিল ৪৮ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন ডলার।একটি দেশের জিডিপির সমান মূল্যের এই ফোন, কে বা কারা ব্যবহার করেন তার নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইকোনমিক টাইমসের মতো গণমাধ্যমের দাবি, বিশ্বের সবচেয়ে দামি এই ফোনটি ব্যবহার করেন, ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানীর স্ত্রী- নিতা আম্বানি।

 


ফি/ক