শেয়ার ক্রয় বিক্রয় কারসাজিতে আরো একবার নাম উঠে এসেছে বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের।
শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির রিপোর্ট অনুযায়ী এবার সাকিব জড়িত ছিলেন আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনের অনিয়মে।
তবে তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। গত ৩০ শে অক্টোবর বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি জারি করেছে।
এই নিয়ে গত দুই বছরে মোট পাচটি কোম্পানির শেয়ার সংক্রান্ত জালিয়াতির তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেল দেশ সেরা এই ক্রিকেটারের।
পৃথক প্রতিটি তদন্ত রিপোর্টের বিশ্লেষনে দেখা যায় রহস্য জনক ভাবে প্রতিবারই একই কারসাজি চক্রের সঙ্গে নাম উঠে আসছে সাকিব আল হাসানের।
সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে এই চক্রের মুল হোতা আবুল খায়ের। যিনি শেয়ার বাজারে পরিচিত হিরু নামে। তিনি ছাড়াও চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন হিরুর বাবা, বোন এবং স্ত্রী।
তথ্য মতে, আবুল খায়ের ও তার সহযোগীরা উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে সিরিয়াল ট্রেডিং এর মাধ্যমে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ার মুল্য বাড়িয়েছেন ৬০ শতাংশ।
এতে চলতি বছরের ২৯ মার্চ থেকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে আইপিডিসি ফাইন্যান্সের শেয়ারের দাম ৩৪ টাকা থেকে বেড়ে ৫৪ টাকায় দাঁড়ায়।
আর এই সময়টাতে সাকিব আল হাসান কমদামে আইপিডিসির ১১ লক্ষ শেয়ার ক্রয় করেন। যা পরবর্তীতে দাম বাড়লে নিজের বিও একাউন্ট ব্যবহার করে বিক্রি করে দেন।
আপাতত এই প্রক্রিয়া স্বাভাবিক মনে হলে ও বিএসইসি বলছে, প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বাড়ানো হয়েছে নিজেদের মধ্যে আন্তলেনদেন করে, যা আইনত নিষিদ্ধ।
তবে এই কারসাজিতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে হিরু এবং তার পরিবার। তারা ১ কোটি ৩৭ লাখ শেয়ার ক্রয় করেছে কম দামে।
বেশি দামে বিক্রি করেছে প্রায় ১ কোটি ৪ লাখ শেয়ার। এই সময়ের মধ্যে হিরু এবং তার সহযোগীরা সর্ব সাকুল্যে প্রায় বিশ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে।
আইন লঙ্ঘন করে এমন অবৈধ শেয়ার লেনদেন করায় বিএসইসি আবুল খায়ের ও তার সহযোগিদের ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে।
তবে কোন শাস্তিমুলক ব্যবস্থার আওতায় পড়েননি সাকিব আল হাসান। জানা যায়নি এসময়টাতে সাকিবের আর্থিক লাভের পরিমান কত ছিল।
এর আগে সম্প্রতি ফরচুন সুজ, বিডিকম অনলাইন, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে হওয়া কারসাজিতেও জড়িয়েছিল মোনার্ক হোল্ডিংসের নাম।
মোনার্ক হোল্ডিংস ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর ব্রোকারেজ হাউজ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এ প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাকিব আল হাসান।
আর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল খায়েরের স্ত্রী সাদিয়া হাসান। প্রশ্ন উঠেছে বারবার অপরাধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আসলেও কেন সাকিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বিএসইসি
এমন প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটি জানায় একটি কোম্পানির শেয়ারের লেনদেনে অনেকেই জড়িত থাকে তবে সবাই একচোটিয়া অপরাধী নয়।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে সাকিবের যোগসাজশ থাকলে ও পাওয়া যায়নি কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রমান, তাই হয়নি কোন শাস্তি।
উল্লেখ্য দেশের সংবাদ মাধ্যমে নানা অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসলেও সাকিব নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনে।
গত দুই বছরের ধারাবাহিক ঘটনাগুলোতে এখনো পাওয়া যায়নি সাকিবের পক্ষ থেকে কোন মন্তব্য। তার প্রতিষ্ঠান বরাবর সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।